প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২২, ২৩:১
আজ ১১ ডিসেম্বর (রবিবার) হিলি পাক-হানাদার মুক্ত দিবস।"ক্ষনিকের জন্য হলেও কাঁদিয়ে তোলে হিলিবাসীকে”। পাক হানাদার বাহিনীর নির্মম নির্যাতন, হত্যা যজ্ঞ আর সম্ভ্রম হানির ঘটনা। স্বরণ করিয়ে দেয় সেই ১৯৭১ সাল, ১১ ডিসেম্বরের ভয়াল দিনের কথা। আজকের এই দিনে “হিলি শক্র মুক্ত” হয়েছিলো।
স্বাধীনতার ৫১ টি বছর পেরিয়ে গেলো। এই অঞ্চলের স্বাধীনতাকামী মানুষ সেদিন হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলো চরম সাহসিকতায়। হানাদার বাহিনী থেমে থেমে মেতে উঠেছিলো নির্মম হত্যাযজ্ঞে। আক্রমন চালিয়েছিলো নিরীহ হিলি সীমান্তবাসীর ওপর। ‘‘সম্মুখ সমর” ও বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার সুড়োংগো করে সন্মুখ যুদ্ধে মেতেছিলো হানাদারেরা।
হাকিমপুর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিয়াকত আলী জানান, ১৯৭১ সালে পাকহানাদাররা উপজেলার ছাতনী গ্রামে শক্ত ঘাটি প্রতিষ্ঠা করে। বিভিন্ন দিকে ক্যাম্প গঠনের মাধ্যমে ভারী অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অবস্থান গ্রহণ করে এবং মুহাড়া পাড়ায় তারা একটি গভীর খাল কেটে বেশ কয়েকটি বাংকার তৈরী করে। ৬-৭ হাজার পাক সেনা ৪০টি ট্যাংক নিয়ে সেখানে অবস্থান করতে থাকে। ৬ ডিসেম্বর ভারত সরকার বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারকে সমর্থনদানের পর হাকিমপুরে ভারত-বাংলাদেশ মিত্র বাহিনীর সাথে পাক সেনাদের প্রচন্ড যুদ্ধ শুরু হয়।
তিনি আরও জানান, প্রথমদিকে মুহাড়া পাড়া এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিত্র বাহিনী ব্যাপক তীরের সম্মুখিন হয়। এসময় তরুন মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা শহীদ হন। পরবর্তীতে মিত্র বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা আরো সু-সংঘঠিত হয়ে ১০ ডিসেম্বর মুহাড়া পাড়া এলাকাসহ পাক সেনাদের বিভিন্ন আস্তানায় আকাশ পথে এবং স্থলপথে একসঙ্গে হামলা চালায়। এসময় দুইদিন ধরে প্রচন্ড যুদ্ধের পর পাকহানাদার বাহিনী পরাস্থ হলে ১১ ডিসেম্বর বেলা ১টার দিকে মুক্তিযুদ্ধের ৭ নম্বর সেক্টরের আওতায় দিনাজপুরের হাকিমপুর ( হিলি) হানদার মুক্ত হয়।
শাহাদত বরণকারী মুক্তিযোদ্ধা এবং মিত্রবাহিনীর সদস্যগনের আত্মত্যাগের প্রতি জাতীর শ্রদ্ধার নিদর্শণ স্বরম্নপ হিলি মুহাড়াপাড়া এলাকায় স্মৃতিস্তম্ভ "সম্মুখ সমর" নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর "স্মৃতিস্তম্ভ সম্মুখ সমর" উদ্বোধন করেন।
প্রতিবছর বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কমান্ডসহ এলাকাবাসী সম্মুখ সমরে নিহত মুক্তিসেনাদের স্মৃতি চারণ, আলোচনা সভা ও রুহের মাগফেরাত কামনাসহ বিভিন্ন কর্মসুচির মাধ্যমে দিনটি পালন করে থাকেন।
উল্লেখ্যঃ এবারে হাকিমপুর উপজেলা প্রশাসন হিলি হানাদার মুক্ত দিবস যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা র্যালীসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন।