প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২২, ২২:৫০
অনুমতি ও ছুটি ছাড়াই রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় দুই বছর ধরে উপস্থিত নেই দুই সহকারী শিক্ষিকা। উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রোজিনা খাতুন এবং একই ইউনিয়নের মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সুমাইয়া সুলতানা'র বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই সহকারী শিক্ষিকা অনুমতি ও ছুটি না নিয়েই প্রায় দুই বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
এর মধ্যে সুমাইয়া সুলতানা কোন অনুমতি ও ছুটি ছাড়াই বছরের পর বছর ও রোজিনা খাতুন দুই দিনের ছুটি নিয়ে অনুপস্থিত রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এমন কর্মকাণ্ডে ব্যাহত হচ্ছে দু’টি বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বালিয়াকান্দি উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোজিনা খাতুন ২০১৬ সালের ৩ আগস্ট এবং খালিয়া মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমাইয়া সুলতানা ২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি সহকারী শিক্ষিকা পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর রোজিনা খাতুন ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের ৮ এবং ৯ তারিখ দুই দিনের নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে আর বিদ্যালয়ে আসেননি এবং সুমাইয়া সুলতানা ২০২০ সালের ১৭ মার্চের পর থেকে তিনিও ছুটি ছাড়াই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত আছেন। জানা গেছে তারা দুই জনই আমেরিকা রয়েছে।
দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুজ্জামান বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ২ দিনের নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে সহকারী শিক্ষিকা রোজিনা খাতুন আর বিদ্যালয়ে আসেনি। পরবর্তীতে জানতে পারি তিনি আমেরিকা চলে গেছেন। তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসকে অবগত করা হয়েছে। একাধিকবার তদন্তও হয়েছে।
খালিয়া মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, কোনো প্রকার অনুমতি ও ছুটি ছাড়াই সুমাইয়া সুলতানা ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। তার পরিবার সূত্রে জানতে পেরেছি তিনি আমেরিকা আছেন, তিনি আর চাকরি করবেন না। তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসকে অবগত করা হয়েছে। শূন্য পদের জন্য অপেক্ষায় রয়েছি, পদশূন্য হলে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে দুটি বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, রোজিনা খাতুন ও সুমাইয়া সুলতানা বিদ্যালয়ে দুইজন শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে পাঠদান ও প্রাতিষ্ঠানিক কাজ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।’সেই দুইজন শিক্ষকের ক্লাস অন্য শিক্ষকদের নিতে হচ্ছে। এতে করে তাদের বাড়তি চাপ পোহাতে হচ্ছে।
তারা তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি না দিয়ে কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত রয়েছে এটা গুরুতর অন্যায়। এ ব্যাপারে উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
বালিয়াকান্দি উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশরাফুল হক বলেন, ছুটি ছাড়াই রোজিনা খাতুন ও সুমাইয়া সুলতানা নামে দু’জন শিক্ষিকা দীর্ঘদিন যাবত কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এরই মধ্যে কয়েকবার তদন্তও হয়েছে। জানতে পেরেছি তারা দুজনই আমেরিকা রয়েছেন। খুব দ্রুত দুটি শূন্য শূন্য ঘোষনা করা হবে এবং শিক্ষক পদায়নের ব্যবস্থা করা হবে।
রাজবাড়ী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন করিমী বলেন, সহকারী শিক্ষক সুমাইয়ার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। দুই মাসের মধ্যে চুড়ান্ত বরখাস্ত হবে এবং রোজিনা খাতুন'কে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে শিক্ষা অফিসার, এখনো তার প্রতিবেদন পাইনি। প্রতিবেদন পেলেই সঠিক ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।