প্রকাশ: ১৯ মে ২০২১, ২০:৩৯
মেহেরপুরে শুরু হয়েছে আম সংগ্রহ। সরকার নির্ধারিত ১৬ মে থেকে আম সংগ্রহের তারিখ থাকলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পুষ্টতার অভাবে ১৯ মে থেকে ব্যাপকহারে শুরু হলো আটি ও বোম্বাই জাতের আম পাড়ার কাজ।
আমের জেলা হিসেবে খ্যাত মেহেরপুর জেলায় এবার আমের বাম্পার ফলন হলেও অনাবৃষ্টির কারণে আমের আকার ছোট হয়েছে। তারপরও আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে এবার মেহেরপুর জেলার তিনটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ছোট বড় আমের বাগান রয়েছে। মেহেরপুর জেলার বিখ্যাত আম বোম্বাই, হিমসাগর এবং নেংড়ার সঙ্গে রয়েছে ফজলি, রুপালি সহ বিভিন্ন প্রজাতির আম।
মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন আম বাগানে ঘুরে দেখা গেছে বাগান মালিকরা আম ভাঙ্গার কাজ শুরু করে দিয়েছে। আঁটি আমের সাথে বোম্বাই আম ভাঙ্গার কাজ চলছে পুরোদমে।
তবে করোনার প্রভাবে চলমান লকডাউনে অন্য জেলার ব্যাপারীদের আনাগোনা কম থাকায় হতাশা প্রকাশ করছেন বাগানিরা। বাগানিরা বলছেন, ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ফড়িয়ারা এসে বাগানে ভিড় জমায়। এবার তার ব্যাতিক্রম হচ্ছে। ফড়িয়াদের আনাগোনা তেমন নেই বললেই চলে।
এভাবে চলতে থাকলে গত বছরের মত এবারও লোকসানে পড়তে পারে আম চাষিরা।
আম চাষি, মোসারফ, শাহনেওয়াজ সোহান, শাবান মন্ডল, ইব্রাহীম বিশ্বাস বলেন, এবার আমের সাইজ ভালো হয়নি, তবে ফলন ভালো হয়েছে। আম সংগ্রহের উযোগী হয়েছে কিন্তু বাইরের ফড়িয়াদের আনাগোনা নেই। কয়েকজন আসলেও দাম দিতে চাচ্ছে না। উপায় না পেয়ে নিজেরাই দেশের বিভিন্ন মোকামে নিয়ে আম গুলো বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
জেলার বাইরে পাঠানোর আগে স্থানীয় বাজার ধরতে মরিয়া বাগানিরা। স্থানীয় বাজারে প্রতি মন বোম্বাই আম বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৪শ টাকা। এছাড়াও আটি আম বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১ হাজার টাকা মন। এছাড়াও ক্ষতি পুশিয়ে নিতে কেউ কেউ শুরু করেছে অনলাইনে আম বিক্রি। আম বাজারজাত ও সংরক্ষনের জন্য সরকারি সহযোগীতা কামনা করেছে এলাকার চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার খাঁ জানান, মেহেরপুরে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে আটি, বোম্বাই ও হিমসাগর আম সংগ্রহের কাজ। আগামী ২৫ মে গোপালভোগ, ২৮ মে ল্যাংড়া ও ৫ জুন থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত হাইব্রিড জাতে আম সংগ্রহের তারিখ ঘোষনা করা হয়েছে।
চলতি মৌসুমে মেহেরপুরে প্রায় ৩৩ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে।