প্রকাশ: ১ মে ২০২১, ২২:৩৩
আমের নতুন রাজধানী হিসেবে খ্যাত নওগাঁ জেলা। জেলায় চলতি মৌসুমে ২৫ হাজার ৭৮৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। গত বছর ২৪হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছিল। গত বছরের চেয়ে চলতি বছর ১হাজার হেক্টর জমিতে বেশি আমের আবাদ হয়েছে।
চাষকৃত আম বাগান থেকে জেলায় ৩ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদিন হবে বলে আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৫মাস ধরে অনাবৃষ্টির কারনে তীব্র খরা ও তাপদাহে গাছ থেকে অনবরত ঝড়ে পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির আম। এতে করে লোকশানের আশঙ্কায় করছেন আম চাষিরা। অন্যদিকে বৃষ্টি হলে আমের ঝড়ে পড়া রোধ কমে যাবে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।
নওগাঁ জেলার বরেন্দ্র অ ল হিসেবে পরিচিত সাপাহার,পোরশা,নিয়ামতপুর, পতœীতলায় গোপালভোগ,লেংড়া, আমরুপালী, আশি^না, ক্ষুদি ক্ষিরসা, মহোনভোগ,লখনা,ফজলীসহ ছোট বড় নানা জাতের আম বাগানে গাছে গাছে ধরেছে আম। এসব এলকার আমে হপার, উঁকুনপোকাসহ বিভিন্ন পোকা মাকড়ের আক্রমনের পাশাপাশি মরিচা রোগ দেখা দেয়ায় আমের শরীরে মরিচাসহ আম ফেটে যাচ্ছে এবং এই রোগাক্রান্ত বেশির ভাগ আম ধারন করছে কালো রং ।
অন্যদিকে রোগ প্রতিরোধে এ সব আমে কীটনাশক, প্রতিষেধক ব্যবহার করেও কোন সুফল মিলছেনা বলে আম চাষিরা। এমন হতে থাকলে জেলায় আমের উৎপাদন ব্যাহত হবার পাশা-পাশি আমচাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবার আশংকা করছেন।
একাধিক আমচাষিরা জানান, মৌসুমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অনাবৃষ্টির কারনে তীব্র খরায় ও পানির সেচ সংকটে গাছ থেকে প্রতিনিয়ত আম ঝড়ে পড়ছে। সেই সাথেআমে হপার, উঁকুনপোকাসহ বিভিন্ন পোকা মাকড়ের আক্রমনের পাশাপাশি মরিচা রোগ দেখা দেয়ায় আমের শরীরে মরিচাসহ আম ফেটে যাচ্ছে এবং এই রোগাক্রান্ত বেশির ভাগ আম ধারন করছে কালো রং। এ সব আমে কীটনাশক,প্রতিষেধক ব্যবহার করেও কোন সুফল মিলছেনা বলে অভিযোগ আম চাষিদের।
সাপাহার উপজেলার পাতারি গ্রামের আমচাষি আইজুল আলম বলেন, বৃষ্টি নেই, তীব্র খরা ও তাপদাহ হওয়ার কারনে আমে হপার ও মাকর পোকার আক্রমন খুব বেশি। ১০-১২ দিন পরপর ঔষুধ স্প্রে করছি কিন্তু এসব পোকা দমন হচ্ছেনা। তবে বৃষ্টি হলে পোকার হাত থেকে আম রক্ষা পাবে বলে আশা করছি।
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার মহেষ বাতান গ্রামের আম চাষি মাহফুজ হোসেন বলেন, বৃষ্টি নেই, অনাবৃষ্টি যার খুব খরা। যার কারনে আমে পোঁকা ও মাছির আক্রমন বেশি। এতে আম কালো হয়ে যাচ্ছে। আম ঝড়ে পড়ে যাচ্ছে। ঔষুধ প্রয়োগে তেমন কাজ হচ্ছেনা।
পোরশার উপজেলার নিতপুর গ্রামের আমচাষি জাকির হোসেন বলেন, আমে পোকার খুব উৎপাত। বারবার ঔষুধ প্রয়োগ করেও পোকা মাকড় দমন হচ্ছেনা। বৃষ্টি নেই যার কারনে এত রোগ-বালাই। গত বছর এমন অনাবৃষ্টি,খরা ও তাপদাহ ছিলনা। এবার যে খুব সমস্যাই ও চিন্তায় রয়েছি আমরা। কবে যে বৃষ্টি হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপ- পরিচালক সামছুল ওয়াদুদ জানান, নওগাঁর সাপাহার,পোরশা, মহাদেবপু উপজেলাসহ কিছু এলাকায় রোগ বালাইয়ের কারনে ঝড়ে পড়লেও এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় কোন প্রভার পড়বেনা। আর যে সকল আমে মরিচা সহ অন্যান্য রোগ বালাই পোকা মাকড় আক্রমন দেখা দিয়েছে কৃষি বিভাগের পরামর্শ মোতাবেক ওই সব আমে এ্যামিষ্টার টপ জাতীয় কীটনাশক ব্যবহার করতে চাষি ভাইদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, তবে পোঁকা-মাকড় তেমন নাই তবে বৃষ্টি না হওয়ার কারনে আম ঝড়ে পড়ছে। বেশ কয়েক মাস থেকে বৃষ্টি নেই। বৃষ্টি না হওয়ার কারনে আম ঝড়ে পড়ছে। আবহাওয়া অফিসসূত্রে আমরা জানতে পেরেছি যে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টি হওয়ার সম্ববনা আছে। আশা করছি বৃষ্টি হলে আম ঝড়ে পড়ারোধ সম্ভব।