আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে যেকোনো সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
তবে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম তার এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া বিএনপি ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সংস্কার করার ম্যান্ডেট নেই। তারা কেবল নির্বাচন পরিচালনার জন্য দায়িত্ব পেয়েছে। এই সরকার নির্বাচন দিতে চাচ্ছে না এবং তারা জনতার ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূস দেশে ফিরে আসেন। ওই সময় দেশজুড়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত ছিল। শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারিয়ে দেশত্যাগ করেন এবং ভারতে আশ্রয় নেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ দস্যুতার শিকার হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেন, তখন কোনো সরকার কার্যকর ছিল না, ছিল কেবল একটি পরিবারকেন্দ্রিক শাসন। সরকারপ্রধানের আদেশেই সব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হতো।
তিনি আরও বলেন, ওই সময় কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে গুম করা হতো। নির্বাচন করতে চাইলেও বাধা সৃষ্টি করা হতো। বড় ব্যবসায়ীরা অবৈধ সুবিধা পেয়েছে, ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তারা ফেরত দেয়নি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ কাঠামোগতভাবে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। তিনি এটিকে এমন এক পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করেন যেখানে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান, নীতি-নৈতিকতা, জনজীবন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, শিক্ষার্থীদের অনুরোধেই তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়েছেন। তার মতে, বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের জন্য রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।