৯০ এর গণআন্দোলনের পর বাংলাদেশে ড. ইউনুসের মতো নেতার প্রয়োজন ছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ শওকত হায়দার (জিকো) সম্পাদক , ইনিউজ৭১
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২০শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৩১ পূর্বাহ্ন
৯০ এর গণআন্দোলনের পর বাংলাদেশে ড. ইউনুসের মতো নেতার প্রয়োজন ছিল।

১৯৯০-এ এরশাদের পতন ছিল গণতন্ত্রের বড় বিজয়। সাধারণ জনগণের জন্য ভাবার সময় বহু মতের একটি সার্বজনীন দেশ হওয়ার কথা ছিল। তবে এ দেশের রাষ্ট্রনায়করা দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তারা এসেছিলেন শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য, আর দীর্ঘদিন থাকার জন্য যা করার দরকার তাই করেছেন, যা আসলে জনগণের সঙ্গে প্রতারণার সামিল ছিল । বারবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া, স্বজনপ্রীতি করা, দেশের সম্পদ পাচারে মগ্ন থাকা—এসবের কারণে জনগণ মনে করেন, বাংলাদেশের জন্য একজন যোগ্য নেতার অভাব ছিল, যিনি এসবের ঊর্ধ্বে থাকবেন দেশকে উন্নত দেশের নেতাদের মতো করে ভাববেন।


তবে বহুদিন পরে তেমন এক নেতার দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ । তবে বিগত বছর গুলোতে হিংসের জের ধরে ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে নানা দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করা হয়েছে। কেউ তাঁকে সুদখোর বলেছেন, কেউ দেশদ্রোহী, কেউবা আবার ধর্মহীন ব্যক্তি হিসেবে দেখেছেন। কিন্তু ২০২৪ সালে অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে এসে তাঁর চিন্তাভাবনা, জ্ঞান ও বিশ্লেষণ সরাসরি শোনার সুযোগ হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে তাঁকে নতুনভাবে দেখার সুযোগ তৈরি হয়েছে।


অথচ এই ড. ইউনুসের বক্তব্য শুনলে বোঝা যায়, তিনি একজন ব্যতিক্রমী ও দূরদর্শী ব্যক্তি। তাঁর প্রতিটি কথায় চিন্তা, অভিজ্ঞতা ও গভীর অন্তর্দৃষ্টি প্রতিফলিত হয়। কোনো বক্তব্যই অপ্রাসঙ্গিক বা অবাস্তব মনে হয় না। বরং সেগুলো বাস্তবসম্মত এবং কার্যকর সমাধানের পথ দেখায়।


তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কখনো ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করেননি, আবার তা অস্বীকারও করেন না। ইতিহাসকে ইতিহাসের জায়গায় রেখে তিনি ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখেন। তিনি কখনো অতিরঞ্জিত কিছু বলেন না, আবার ইচ্ছাকৃতভাবে ছোটও করেন না। এই দৃষ্টিভঙ্গি একজন আদর্শ নেতার পরিচয় বহন করে।


সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তিনি কখনো কাউকে ব্যঙ্গ করেন না বা বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য দেন না। কারও বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন না, প্রতিশোধের মনোভাব পোষণ করেন না। অহংকার তাঁর স্বভাবে নেই, চাটুকারিতাও তাঁকে স্পর্শ করেনি। তিনি কখনো মিথ্যা প্রশংসা করে কাউকে খুশি করার চেষ্টা করেননি। বরং সত্য ও বাস্তবতাকে তুলে ধরেছেন।


আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হলো, তিনি কখনো লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান না। আবার উত্তেজিত হয়ে বক্তব্যও দেন না। বরং ঠান্ডা মাথায়, যুক্তি ও কৌশলের মাধ্যমে তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন করেন। একজন দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্য এই গুণগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


তিনি ভবিষ্যতের কথা বলেন, স্বপ্ন দেখান, তরুণদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দেন। ধর্মকে কখনো আক্রমণ করেন না, বরং সব মত ও পথের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকেন। তাঁর চিন্তার পরিসর শুধুমাত্র অর্থনীতি ও ব্যবসার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং একটি সমৃদ্ধ ও টেকসই বাংলাদেশের দিকেও প্রসারিত।


ড. মুহাম্মদ ইউনুস নিঃসন্দেহে একজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব। তাঁর চিন্তাভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি একজন বিশ্বমানের নেতার পরিচয় বহন করে। যদি বাংলাদেশ তাঁর মতো একজন নেতা পেত, তাহলে হয়তো দেশের অগ্রগতি আরও সুসংগঠিত ও গতিশীল হতো।


পরিশেষে আগামীতে দেশে নতুন সরকার আসবে , নতুন নেতা আসবে , জনগণের জন্য এমন যোগ্য কোন নেতা আসবে দেশের জন্য এই প্রত্যাশা জনগণের !!!!