নোয়াখালীতে ঠিকাদারী কাজে বাধা ও হামলা-ভাংচুরের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে ফের হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। বিএনপি নেতার ভাইয়ের নেতৃত্বে এই হামলার সময় অন্তত পাঁচজন আহত হন এবং একজন সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
সাবেক ছাত্রদল নেতা ও ঠিকাদার আবদুল করিম মুক্তার নেতৃত্বে আয়োজিত মানববন্ধনটি নোয়াখালী শহর বিএনপির সভাপতি আবু নাছেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে সংগঠিত হয়। মুক্তার দাবি, নাছেরের সহযোগীদের হামলায় তার ঠিকাদারী কাজে বাধা সৃষ্টি হয়, এস্কেভেটর মেশিন ভাংচুর করা হয় এবং শ্রমিকদের কুপিয়ে আহত করা হয়। মানববন্ধনের শেষ দিকে নাছেরের ছোট ভাই জুয়েলের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মানববন্ধনে হামলা চালায়।
হামলার সময় হামলাকারীরা নোয়াখালী প্রেসক্লাবে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং সড়কে থাকা একটি যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস ভাংচুর করে। দেশ টিভির প্রতিনিধি মাওলা সুজনকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। ইটপাটকেলের আঘাতে সাংবাদিকসহ আরও চারজন আহত হন। খবর পেয়ে সুধারাম মডেল থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নোয়াখালী পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আবু নাছের জানান, দলীয় কোন্দল এবং শহরের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি ও তার ভাই এই হামলায় জড়িত নন বলে দাবি করেন। তিনি আরও জানান, মুক্তার ঠিকাদারী কাজ সম্পর্কেও তার কোনো ধারণা নেই।
সুধারাম থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। তবে এখনো কোনো পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
হামলায় আহত সাংবাদিকরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন। তাদের মতে, সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আঘাত। প্রেসক্লাবের মতো নিরাপদ স্থানে এমন হামলা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক সংগঠনগুলো।
স্থানীয়রা জানান, শহরের রাজনীতিতে সাম্প্রতিক সময়ে দলীয় কোন্দল বেড়ে চলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। তারা দ্রুত এর সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
এই ঘটনায় শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে বলে প্রত্যাশা করছে এলাকাবাসী।
মানববন্ধন আয়োজকরা জানান, এমন হামলা প্রত্যাশিত ছিল না। তারা এই ধরনের আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।