খাদ্যগুদামে ধান দিতে অনীহা কৃষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
শামসুজ্জোহা সুজন , উপজেলা প্রতিনিধি, (ভূরুঙ্গামারী) কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: শনিবার ৪ঠা জুন ২০২২ ০৯:৩০ অপরাহ্ন
খাদ্যগুদামে ধান দিতে অনীহা কৃষকদের

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে চলতি মৌসুমের অভ্যন্তরীণ বোরো ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হলেও সরকারের নির্ধারিত মূল্যে গুদামে ধান জমা দিতে কৃষকের আগ্রহ নেই। সরকার নির্ধারিত দাম ও বাজার দাম কাছাকাছি হওয়ায় গুদামে ধান দেওয়ার আগ্রহ কম কৃষকদের। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মাত্র পনেরো শতাংশ ধান সংগ্রহ হয়েছে। লটারির মাধ্যমে ধান জমাদানের জন্য নির্বাচিত কৃষকদের প্রায় ৮৫ শতাংশই এখনো ধান জমা দেননি। 


জয়মনিরহাট খাদ্য গুদাম সূত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে অভ্যন্তরীণ ধান সংগ্রহ কার্যক্রমের আওতায় ভূরুঙ্গামারীর কৃষকদের নিকট থেকে ১ হাজার ৮০ টাকা মণ দরে ২ হাজার ৩০৩ মেট্রিক টন বোরো ধান সংগ্রহ করা হবে। উপজেলার নিবন্ধিত প্রায় ১৩ হাজার ৪০০ জন কৃষকের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে ৭৬৭ জন কৃষককে ৩ মেট্রিক টন করে ধান জমাদানের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।


 আগামী ৫ জুনের মধ্যে নির্বাচিত কৃষকদের ধান জমা দিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে ধান দিতে না পারলে পুনরায় লটারি করে কৃষক নির্বাচন করা হবে। নির্বাচিত কৃষকরা গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৮৬ মেট্রিক টন ধান জমা দিয়েছেন। উপজেলার কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানাগেছে, বর্তমানে বাজারে মোটামুটি শুকনো মোটা ধান ৯৫০ থেকে ৯৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 


গুদামে ধান দিতে হলে তা ভালো করে শুকিয়ে ঝাড়াই করে পৌঁছে দিতে হয়। এতে সরকার নির্ধারিত দামে গুদামে ধান দেওয়া আর বাজারের দামে বিক্রি করা একই সমান। গুদামে ধান দিতে গেলে বরং বেশি পরিশ্রম করতে হয়। তাই তারা গুদামে ধান না দিয়ে বাজারের ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করছেন। 


আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের কৃষক গোলজার হোসেন বলেন, ‘গুদামে ধান দিতে হলে ব্যাংকে হিসাব খুলতে হয়। গুদামে ধান জমা দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে হয়।একবার গুদামে যাও আরেকবার ব্যাংকে যাও আমরা কৃষক আমাদের এতো দৌড়াদৌড়ির সুযোগ কোথায়।' 


তিলাই ইউনিয়নের বোরোধান চাষি বদিউজ্জামান বলেন, মোটামুটি শুকনা ধান বাড়ি হতে ৯৫০ থেকে ৯৭০ টাকা মণ দরে কিনছেন ব্যবসায়ীরা। গুদামে ধান দিতে হলে ভালো মতো শুকিয়ে ঝেড়ে দিতে হয়। এতে প্রতি মণে ৪ থেকে ৫ কেজি কমে যাবে। এছাড়া গুদামে পৌঁছে দেয়ার জন্য গাড়ি ভাড়া লাগবে। সব মিলিয়ে বাজারের ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করাই লাভজনক। 


জয়মনিরহাট খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনার রশিদ বলেন, ‘বাজারে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় গুদামে ধান দিতে কৃষকদের আগ্রহ কম। তবে আশা করা যায় সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।'