ভোলায় তলিয়ে গেছে আমনের বীজতলা, দিশেহারা কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার ৯ই আগস্ট ২০২৩ ০৮:২৭ অপরাহ্ন
ভোলায় তলিয়ে গেছে আমনের বীজতলা, দিশেহারা কৃষক

গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ আর জোয়ারের কারণে ডুবে আছে ভোলার শত শত হেক্টর জমির আমনের বীজতলা। যে মুহূর্তে বীজতলায় চারা গজিয়ে উঠেছে, ঠিক সেই মুহূর্তেই জলাবদ্ধতার কারণে এসব বীজতলা নষ্টের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। প্রকৃতির এমন বৈরী আচরণে দিশেহারা চাষিরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, এমন সংকট মোকাবিলায় কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।


কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় এ মৌসুমে বেশি লাভের আশায় আমন আবাদ শুরু করেন চাষিরা। এজন্য পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে বীজতলা তৈরি করেন তারা। কৃষকদের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে আমনের বীজতলা দেখা গেলেও গত নয়দিনের টানা বর্ষণে ডুবে গেছে ক্ষেত।  


জেলার ১১ হাজার ৮১০ হেক্টর জমির বীজতলা পানির নিচে। ডুবে থাকা কোনো কোনো ক্ষেতের চারায় পচন ধরেছে। একই অবস্থা গ্রীষ্মকালীন সবজিরও।


এতে চরমভাবে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। তাদের অনেকেই এখন লোকসানের আশঙ্কায় দিশেহারা।


ভোলা সদরের বাপ্তা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধ বীজতলা। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।


৩ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক হারুন জানান, এ বছর তিনি ১৫ গণ্ডা জমিতে আমনের বীজতলা করেছেন। কিন্তু সবই এখন পানির নিচে।  


একই অবস্থার কথা জানান কামাল, শাহিন, ইউসুফ ও সেলিম নামের কয়েকজন কৃষক।


তাদের ভাষ্য, এ বছরের মতো এমন বৃষ্টি আগে হয়নি। তার মধ্যে আবার জোয়ারের পানিও বেড়েছে। এতে ক্ষেত ডুবে আছে। পচন ধরেছে জালার (বীজতলা)।  আমাদের লোকসান হবে। নতুন করে আবার বীজতলা তৈরি করতে অনেক টাকা খরচ হবে। এ নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি।


এদিকে ভোলা আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, এ মাসের শুরু থেকে গত আটদিনে জেলায় ৪২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর এতেই উপকূলের নিচু এলাকা ডুবে যায়।


ভোলা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মাহাবুবুর রহমান বলেন, আপাতত বৃষ্টি না হলেও আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।


কৃষকরা জানান, বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে কৃষকদের বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে। দ্রুত পানি নেমে না গেলে সব বীজতলা নষ্টের আশঙ্কা করছেন তারা।


এ ব্যাপারে ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. হাসান  ওয়ারিসুল কবীর বলেন, শতভাগ বীজতলায় পানি জমেছে, ক্ষতির বিষয়টি তবে এখনই বলা যাচ্ছে না, আমরা দ্রুত পানি নিষ্কাশনের পরামর্শ দিয়েছি কৃষকদের।


এ বছর জেলায় এক লাখ ৭৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।