যমুনার চরাঞ্চলের পুষ্টি গুণসম্পন্ন মাষকলাই চাষের বাম্পার ফলন

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফুয়াদ হাসান রঞ্জু, উপজেলা প্রতিনিধি, ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১৭ই নভেম্বর ২০২২ ০৬:৪১ অপরাহ্ন
যমুনার চরাঞ্চলের পুষ্টি গুণসম্পন্ন মাষকলাই চাষের বাম্পার ফলন

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলাটি যমুনা নদীবিধৌত অঞ্চল হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত। বর্ষাকালে নদী ভাঙন ও বন্যায় অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বর্ষা মৌসুম শেষে এখানে জেগে উঠে বিস্তৃর্ণ বালুর চর। সেই বালু চরে আবাদ হয় নানা রকম ফসল।


যমুনার বুকে জেগে উঠা বালু চরে চাষ হচ্ছে ভিটামিন বি সমৃদ্ধ ও পুষ্টি গুণসম্পন্ন মাষকলাই ডালের চাষ। গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে যমুনা চরাঞ্চলে ব্যাপকভাবে এর চাষ হচ্ছে। বাজারে ভালো দাম থাকায় উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলের কৃষকদের মাঝে মাষকলাই চাষে আগ্রহ বেড়ে চলেছে। জমিতে কোন রকম মাটি আলগা করে মাষকলাইয়ের বীজ ছড়িয়ে দিয়ে কোন প্রকার নিড়ানি ও সেচ ছাড়াই এর চাষ হয়ে থাকে। যখন মাষকলায়ের ছেইগুলো পেকে সোনালী রঙ্গের হয়ে যায় তখন সেগুলো খেত থেকে উঠিয়ে মাড়াই করে সংরক্ষণ করে কৃষকরা।  

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার অর্জুনা ও গাবসারা চরাঞ্চলের কৃষকেরা মাঠ জুড়ে মাষকলাই চাষ করেছেন। ধু ধু বালুচরে যতদূর চোখ যায় মাষকলাই গাছে ছেয়ে গেছে চারিদিক। প্রতিটি মাষকলাইয়ের গাছগুলোতে ছেই ধরতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলন হবে বলে মনে করছেন এখানকার কৃষকরা।


মাষকলাই চাষি মফিজ মিয়া জানান, এ বছর মাষকলাইয়ের আবাদ ভালো হয়েছে। আমি অন্যান্য ফসলের সাথে মাষকলাই আবাদ করি। খরচ কম হওয়ায় এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় গত বছরের চেয়ে এবার আরও বেশি জমিতে মাষকলাই চাষ করেছি। 


অর্জুনা চরাঞ্চলের কৃষক আমজাদ আলী বলেন, এ বছর আমি প্রায় দুই বিঘা জমিতে মাষকলাই চাষ করেছি। ইতিমধ্যে গাছগুলো ছেই ধরতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাষকলাই ডালের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।


মাষকলাই চাষি জমির উদ্দিন বলেন, আমাদের চরাঞ্চলের বালি মাটি ও আবহাওয়া মাষকলাই চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এবছর আমাদের চরাঞ্চলের কৃষকরা গত বছরের চেয়ে বেশি জমিতে মাষকলাই আবাদ করেছে। স্থানীয় হাট-বাজারে চরাঞ্চলের অন্যান্য ফসলের চেয়ে মাষকলাই এর চাহিদা ও দাম অনেক বেশি।



এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. মোঃ হুমায়ূন কবির বলেন, চলতি মৌসুমে  উপজেলার চরাঞ্চলে ১ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে মাষকলাই চাষ হয়েছে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি হেক্টর জমিতে ১.২৫ মেট্টিকটন মাষকলাই উৎপাদন হবে। চলতি মৌসুমে মাষকলাই ডালের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩৭ মেট্টিকটন। উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি ও উৎপাদন বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছি।