যমুনা চরে তিল চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফুয়াদ হাসান রঞ্জু, উপজেলা প্রতিনিধি, ভূঞাপুর- টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৭শে মে ২০২২ ০৬:০৩ অপরাহ্ন
যমুনা চরে তিল চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভবনা

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের যমুনার চরাঞ্চলে ফসলের ফলন অনেক ভালো হয়। এখানে সারা বছর নানা ধরনের ফসলের আবাদ হয়ে থাকে। চলতি বছর তিলের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা মনে করছেন উপজেলা কৃষি অফিস ও তিল চাষীরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বন্যা আসার আগেই তিল ঘরে তুলতে পারলে অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হতে পারবে চরাঞ্চলের তিল চাষীরা। 


উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলে ২ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে তিলের চাষ করা হয়েছে।


সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চরাঞ্চল বেষ্টিত অর্জুনা, গাবসারা, গোবিন্দাসী ও নিকরাইল ইউনিয়নের যমুনা চরাঞ্চলে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি তিলের ব্যাপক আবাদ হয়েছে। যতদূর চোখ যায় চারিদিকে তিলের সবুজ গাছের সমাহার। সবুজ গাছগুলোতে তিল ও সাদা ফুলে ভরে গেছে। বেশ কিছু অংশে তিল পরিপক্ক হয়েছে। কয়েক  দিনের মধ্যেই তিল কাটতে শুরু করবে তিল চাষীরা। ফলন ভালো হওয়ায় খুশি এখানকার কৃষকরা।


এদিকে গত কয়েক দিনে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষনে যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায়  উপজেলার চরাঞ্চলের নিচু এলাকার তিল, কাউন, রাধুঁনী সজ সহ ফসলের জমি পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। নিচু  জমির ফসলের কিছুটা ক্ষতি হলেও বন্যার আগেই তিল সহ উচুঁ জমির অন্যান্য ফসল ঘরে তুলতে পারবে চরাঞ্চলের কৃষকরা, এমনটাই মনে করছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস। বর্তমানে  যমুনার পানি কমতে শুরু করায় স্বস্তি ফিরে পেয়েছে তিল চাষীরা।


উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের যমুনা চরাঞ্চলের তিল চাষী আজমত আলী, চাঁন মাহমুদ, গফুর আলী সহ আরো অনেকে জানান, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর আমাদের চরাঞ্চলে তিলের আবাদ তুলনামূলকভাবে ভালো হয়েছে। তিল চাষ অত্যন্ত সহজ ও লাভজনক। জমির মাটি সমান করে বীজ ছিটানোর তিন মাস পর সেচ, সার, কীটনাশক ছাড়াই তিল ঘরে তুলতে পারি। তিল চাষে খরচ কম, লাভ বেশি। আশা করছি এবছর বিঘা প্রতি ৯ থেকে ১০ মন তিল পাবো। 


কৃষকরা আরও জানান, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাদেরকে বিনামূল্যে উন্নত জাতের বীজ ও সার দিয়েছেন। এছাড়া কৃষি কর্মকর্তা সহ উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে এসে আমাদেরকে ভালো ফসল উৎপাদনের জন্য নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। 


চরাঞ্চলের রামপুর গ্রামের তিল চাষী শুক্কুর আলী বলেন, আমি ছয় বিঘা জমিতে তিল চাষ করেছি। উচ্চ ফলনশীল তিলের বীজ ব্যবহারের কারণে ফলন অনেক ভালো হয়েছে। আশা করছি বিঘা প্রতি ৮ থেকে ১০ মন করে তিল পাবো। বাজারে দাম ভালো পেলে ছয় বিঘায় খরচ বাদে এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ করতে পারবো। 


এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, চলতি বছরে উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলের তিল চাষীদের মাঝে বিনামূল্যে উন্নত ফলনশীল জাতের তিলের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। উন্নত জাতের বীজ ব্যবহারের কারণে তিলের বাম্পার হয়েছে। আমরা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদেরকে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এ বছর যমুনার চরাঞ্চলে ২ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে তিল চাষ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ৮৪৬ মেট্টিকটন।