আশাশুনিতে ফের ভয়াবহ বাঁধ ভাঙন, বাড়িঘর বিলীন

নিজস্ব প্রতিবেদক
সচ্চিদানন্দ দে সদয়, আশাশুনি উপজেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষিরা
প্রকাশিত: সোমবার ৩রা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:২৪ অপরাহ্ন
আশাশুনিতে ফের ভয়াবহ বাঁধ ভাঙন, বাড়িঘর বিলীন

আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের মধ্যম চাপড়ায় ফের ভয়াবহ বাঁধ ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত দুই দিনে ১০ হাত এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং দুটি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ৮টি বাড়ি এখন ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এই পরিস্থিতির জন্য প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যকলাপকে দায়ী করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।  


চাপড়া গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মরিচ্চাপ নদীটি তার প্রখর স্রোতে বারবার বাঁধ ভেঙে চলে যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে নদীটির ভাঙন প্রবণতা বাড়লেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ২০২১ সালে নদী খননের কাজ শুরু হলে অন্যান্য এলাকায় কার্যক্রম চললেও চাপড়া এলাকার পূর্বপাড়ায় সঠিকভাবে কাজ হয়নি। ফলে নতুন নতুন এলাকা ভেঙে যাচ্ছে এবং বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।  


ভাঙন থেকে রক্ষায় এলাকাবাসী বহুবার প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে আবেদন করেছে। তারা মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ সমাবেশও করেছে। কিন্তু প্রতিবারই কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। খনন কাজ অব্যাহত রাখায় নতুন নতুন এলাকা ভাঙনের কবলে পড়ছে।  


এখন পর্যন্ত মনিরুল ইসলাম ও মাজেদ সরদারের বাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। পাশাপাশি শাহিনুর ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, মফিজুল ইসলাম, মিঠু, মোহাম্মদ আলী, পল্টু, জাকাত ও রমজান আলীর বাড়িঘর, ল্যাট্রিন, গোয়ালঘর এবং পানির ট্যাংকি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার হুমকিতে রয়েছে।  


গত দুই দিনে আরও ১০ হাত এলাকা নদী গর্ভে চলে গেছে। এর ফলে হাজারো মানুষের জীবনযাত্রা হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন ও পাউবো কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এ ভয়াবহ পরিণতির কারণ।  


উপজেলা যুব দলের সদস্য সচিব আবু জাহিদ সোহাগ বলেন, বাঁধ রক্ষা এবং নদী খনন একসঙ্গে করা উচিত। বর্তমানে নদী খনন করার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর দুর্ভোগ বাড়ছে। তিনি দ্রুত বাঁধ রক্ষা ও নদী খননের কাজ সঠিকভাবে চালানোর দাবি জানান।  


এদিকে, স্থানীয়রা একযোগে সরকারের প্রতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বিশ্বাস করেন, প্রশাসন যদি দ্রুত পদক্ষেপ নেয়, তবে বাঁধ রক্ষা সম্ভব এবং ভাঙন থেকে এলাকাটি বাঁচানো যাবে।  


এই পরিস্থিতিতে আশাশুনি উপজেলার সাধারণ জনগণ আশা করছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি দ্রুত মেনে নেবে এবং বাঁধ রক্ষা ও নদী খননের কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করবে।  


এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন এই বিপদগ্রস্ত এলাকাটির মানুষের জন্য কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।