বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামীতে আর কোনো ব্যক্তি স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না, এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চান তিনি। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে দলের ৩১ দফা সংস্কারের আলোচনাসভায় এসব কথা বলেন তারেক রহমান। তিনি দাবি করেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে রাষ্ট্র পরিচালনা হবে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে, যেখানে আইনের শাসন ও জনগণের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে দেশ চলবে।
তারেক রহমান বলেন, "বিএনপি কখনোই আওয়ামী লীগের মতো পরিবারতান্ত্রিক বা অলিগার্কিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে না।" তিনি আরও বলেন, "আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই, যেখানে ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার আর মাথাচাড়া দিতে পারবে না। আগামীতে আর কোনো প্রধানমন্ত্রীও স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারবে না।"
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ক্ষমতার পরিবর্তন শুধুমাত্র এক দল থেকে আরেক দলে ক্ষমতার হস্তান্তর নয়, বরং এটি জনগণের অধিকার ও অংশীদারিত্বের নিশ্চয়তা প্রদান করবে। তিনি এও নিশ্চিত করেন যে, সরকারের সমালোচনার জন্য কোনো রাজনৈতিক নেতাকে হেনস্তা করা হবে না এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করা হবে।
এদিনের আলোচনায় ৩১ দফা সংস্কারের প্রস্তাবও উত্থাপন করেন তারেক রহমান। এই সংস্কারের আওতায় বিএনপি বলছে, ফ্যামিলি কার্ড, বেতার ভাতা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য ইউপি পর্যন্ত সেল সেন্টার প্রতিষ্ঠা, কৃষিকে শিল্পে পরিণত করা, দুর্নীতি বন্ধ করার পাশাপাশি ঐতিহাসিক খাল খনন ও ব্লু ইকোনমি নিয়ে বিশদ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
এছাড়া, দলটি ঘোষণা করেছে, সব নাগরিকের জন্য আবাসিক সুবিধা নিশ্চিত করা হবে এবং একটি সুরক্ষিত বাংলাদেশ গড়ার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাউদ্দিন আহমেদ, ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন, নজরুল ইসলাম খান, অধ্যাপক মাহফুল উল্লাহ, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, এবং বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
এদিনের আলোচনায় তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে সংঘটিত দেড় হাজার হত্যার প্রতি কোন অনুশোচনা বা অনুতাপ না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য কোনো অনুশোচনা নেই, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।"
এভাবে, বিএনপি আসন্ন রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য তার ৩১ দফা সংস্কারের প্রস্তাব তুলে ধরে, জনগণের ক্ষমতায়ন এবং আইনের শাসনের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী, স্বাধীন এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।