সৌদি আরবে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেল দেবীদ্বারের সিয়ামের: বাড়িতে শোকের মাতম

নিজস্ব প্রতিবেদক
শফিউল আলম রাজীব, জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: রবিবার ৬ই অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৪৭ অপরাহ্ন
সৌদি আরবে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেল দেবীদ্বারের সিয়ামের: বাড়িতে শোকের মাতম

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা গেল দেবীদ্বারের সিয়াম(২২)। অভাবগ্রস্থ্য পরিবারের চাকা ঘুরাতে ধার-দেনা করে ১৪ মাস পূর্বে সৌদী আরবের রিয়াদ শহরে পারি জমিয়েছিল নিহত সিয়াম। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ঋণের বোঝা পরিবারের মাথায় রেখেই, গোটা পরিবারকে এক অনিশ্চিয়তার মধ্যে ফেলে রেখে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান সিয়াম।


ঘটনাটি ঘটে, শনিবার (৫ অক্টোবর) সৌদি আরবের রিয়াদ শহরে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৪টায়। একটি মাদ্রাসার পানির মটারের কাজ করার সময় বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে তার মৃত্যু হয়। নিহত সিয়াম(২২) কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ওয়াহেদপুর গ্রামের বড়বাড়ির মোঃ আসুম উদ্দিনের পুত্র। পরিবারের বড় ছেলের মৃত্যুতে পুরো পরিবারে বইছে শোকের মাতম।


রোববার (৬ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে নিহতের বাড়িতে গেলে নিহত সিয়ামের চাচা জসিম মিয়া জানান, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে প্রায় ৫ লক্ষাধীক টাকা ধারদেনা করে সৌদি আরবে পাড়ি জমান সিয়াম। সেখানে রিয়াদের একটি মাদ্রাসার গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে কাজে গেলেও ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করতেন। গতকাল শনিবার মাদ্রাসার পানির মটর এর কাজ করতে গিয়ে বৈদ্যুতিক শকে তার মৃত্যু হয়। অশ্রুসিক্ত নয়নে তিনি আরও জানান, সিয়াম পরিবারের বড় সন্তান, সংসারের হাল ধরতেই প্রবাসে পাড়ি জমান। সিয়ামের বাবা আসুম উদ্দিন ১৮ বছর সৌদি আরবে প্রবাসি জীবন শেষ করে গত জুন মাসে অসুস্থ হয়ে দেশে ফিরেন। সিয়ামের বাবা তার প্রবাস জীবনে কিছুই করতে পারেনি। উল্টো অসুস্থ হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ছেলে প্রবাসে যাওয়াতে তিনি দেশে ফিরে আসেন। সিয়াম তার পরিবারের হাল ধরেন, তার আয় রোজগার দিয়েই চলত পরিবারের খরচ। তার মৃত্যুতে আমরা সবাই আজ বাকরুদ্ধ। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সিয়াম ছিল সবার বড়। ছোট ভাই সিফাত (১১) এবং ছোট বোন হাবিবা (৮)। তিনি আরো জানান, সিয়ামের ঋনের ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এখনো শোধ করতে পারেনি। একমাত্র উপর্জনকারীর মৃত্যুতে অনিশ্চিত অন্ধকারে গোটা পরিবার।


এদিকে পুত্র শোকে বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন নিহতের মা মোর্শেদা বেগম। তিনি যেনো বিশ্বাস করতেই পারছেন না ছেলের মৃত্যুর কথা। বারবার শুধু বলছেন তুই আমাদের আগে চলে গেলি আমরা কিভাবে থাকবো। তার মা সরকারের কাছে দাবী তুলেছেন সন্তানের লাশ যেন দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন।