প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৫, ১৫:৫৩
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশের হোম ম্যাচে আজ মুখোমুখি হচ্ছে সিঙ্গাপুর। হামজা-জামালদের খেলা দেখতে গ্যালারিতে উপচে পড়া ভিড়ের আভাস মিলেছে আগেই। তবে ২০ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামে টিকিট বিতরণ নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। সাধারণ দর্শকদের পাশাপাশি দেশের বড় বড় ক্লাব, সাবেক ফুটবলার এবং স্টেকহোল্ডাররাও টিকিট সংকটে পড়েছেন। এতে করে ফুটবলাঙ্গনে সৃষ্টি হয়েছে এক ধরনের অসন্তোষ।
প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান মাত্র দুটি টিকিট পেয়েছে বাফুফে থেকে। একটির মালিকানা ক্লাব সভাপতির, অন্যটি ক্লাব কাউন্সিলরের। ক্লাবটির ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব জানিয়েছেন, প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোর জন্য সৌজন্যমূলকভাবে অন্তত ১০টি টিকিট বরাদ্দ দেওয়া উচিত ছিল। কারণ ক্লাবগুলোর পরিচালক, ডোনার এবং কর্মকর্তা মিলিয়ে অনেকেই ফুটবলের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত।
গুজব ছিল, মোহামেডান নাকি ২০০ টিকিট কিনেছে। তবে নকীব স্পষ্ট করেছেন যে কিছু সাবেক ফুটবলার ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু টিকিট কেনা হয়েছে, যার সঙ্গে ক্লাবের কোনো সম্পর্ক নেই। একই অবস্থা আবাহনী, বসুন্ধরা কিংস ও ব্রাদার্সের মতো ক্লাবগুলোরও। অনেকে টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়েছেন। তৃণমূলের ক্লাব এবং সাবেক ফুটবলারদের জন্য এই অবহেলা আরও বেশি দৃষ্টিকটু।
বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্যরাও এবার টিকিট নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। মোট ২১ জন সদস্যের জন্য ছিল মাত্র ৪টি ক্লাব হাউজ ও ২০টি গ্যালারি টিকিট। তারা কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে অতিরিক্ত টিকিট কিনেছেন, কিন্তু সে সুযোগও সব সময় সবার জন্য ছিল না। ফলে এ নিয়েও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, সামাজিক ক্লাব ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাছে আগেভাগেই বড় আকারে টিকিট বিক্রি করে দিয়েছে বাফুফে। মোবাইল অপারেটর রবি ম্যাচ শুরু আগেই ব্লক করে নিয়েছে স্টেডিয়ামের একটি অংশ। অথচ রবির ফুটবলের সঙ্গে সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। বরং বসুন্ধরা গ্রুপ, ঢাকা ব্যাংক, রেডিয়্যান্ট গ্রুপের মতো প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা অনেক গভীর, যাদের উপেক্ষা করা হয়েছে।
জাতীয় দলের খেলোয়াড়রাও টিকিট পেয়েছেন মাত্র তিনটি করে। হেড কোচ থেকে শুরু করে খেলোয়াড়দের জন্য বরাদ্দ কম হওয়ায় অনেকেই পরিবার নিয়ে খেলা দেখতে পারছেন না। সাবেক ফুটবলারদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০০টি টিকিট, যেটা একেবারেই অপ্রতুল। অনেকেই পরিবার নিয়ে স্টেডিয়ামে যেতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সবচেয়ে সমালোচনার বিষয় হলো কাউন্সিলরদের উপেক্ষা। যাদের ভোটে বাফুফের কমিটি নির্বাচিত হয়েছে, তাদের অনেকেই টিকিট পাননি। এমনকি ফোন ধরেননি অনেক কর্মকর্তা। এই অবস্থায় বাফুফের ওপর অসন্তোষ ক্রমেই বেড়ে চলেছে, যা ফুটবলের জন্য শুভ লক্ষণ নয়।
ময়মনসিংহ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেছেন, প্রকৃত স্টেকহোল্ডারদের জন্য যথাযথভাবে টিকিট বরাদ্দ না রেখে সরাসরি বিক্রি শুরু করাটাই আজকের এই বিশৃঙ্খলার মূল কারণ। তিনি বলেন, তৃণমূলের সংগঠকরা ফুটবলের জন্য কাজ করলেও এবার তারা অপমানিত বোধ করছেন। এতে ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা ক্ষুণ্ন হচ্ছে।