নওগাঁর আত্রাই উপজেলা এখন পেঁয়াজ বীজ চাষে আরও উন্নত এবং লাভজনক। সারা বছর পেঁয়াজের বাজার চাঙ্গা থাকায় চাষিরা এই ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, চলতি বছরে পেঁয়াজ বীজের উচ্চ বাজার মূল্যে কৃষকরা ভালো লাভের আশা করছেন। উপজেলা জুড়ে, বিশেষ করে শাহাগোলা ইউনিয়নের পূর্বমিরাপুর, মিরাপুর, হাতিয়াপাড়া ও তারাটিয়া গ্রামে পেঁয়াজ বীজ চাষ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আবহাওয়াও এই বছর অনুকূল হওয়ায় কৃষকরা মাঠে মাঠে পরিচর্যায় ব্যস্ত আছেন।
পেঁয়াজ বীজের এই ফুলের সাদা রূপকে স্থানীয়রা ‘কালো সোনা’ নামে অভিহিত করে। কারণ, এই ফসলের বীজের বাজার মূল্য অত্যন্ত উচ্চ এবং তা কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থাকে মজবুত করে। শাহাগোলা ইউনিয়নের সাদ্দাম হোসেন জানিয়েছেন, গত বছর পেঁয়াজ বীজের দাম ভালো পাওয়ায়, তিনি এ বছর আরও বেশি জমিতে পেঁয়াজ বীজ চাষ করেছেন। স্থানীয় কৃষকদেরও উৎসাহ বৃদ্ধি পেয়েছে, অনেকেই তাকে অনুসরণ করে পেঁয়াজ বীজ চাষে মনোযোগ দিয়েছেন।
এ বছর এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজ চাষ করা ফুলবাড়ি গ্রামের কৃষক মো. আব্দুর রহিম জানিয়েছেন, পেঁয়াজ বীজ চাষে তিনি লাভবান হয়েছেন এবং আশা করছেন এই বছরের ফসলও তার জন্য মুনাফা নিয়ে আসবে। এছাড়া, হাতিয়াপাড়া গ্রামের মো. উজ্জল হোসেন জানিয়েছেন, তিনি দেড় বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজ চাষ করছেন এবং এই বছর প্রায় দেড় লাখ টাকার ওপরে লাভের আশা করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরে ২১৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আরও বেশি অর্জিত হতে পারে। কৃষকদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্যও কৃষি অফিস তাদের সহযোগিতা প্রদান করছে।
উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার জানিয়েছেন, পেঁয়াজ বীজ চাষে কৃষকরা যাতে কোনো সমস্যায় না পড়েন, সে জন্য সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এবারের পেঁয়াজ চাষের ফলন এবং বাজারমূল্য উভয়ই ভালো হওয়ায় কৃষকরা বেশ উৎফুল্ল।
আত্রাইয়ে পেঁয়াজ বীজ চাষ এখন ‘কালো সোনা’ নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে, যা কৃষকদের জন্য এক নতুন আশার আলো। তাদের পরিশ্রম এবং প্রকৃতির সহযোগিতায় এই ফসলটি বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।