ভারতের উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের নবীন মাণ্ডি অঞ্চলে গরু হত্যার অভিযোগে এক যুবককে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত যুবকের নাম শাহেদিন। গত ২৯-৩০ ডিসেম্বরের মধ্যবর্তী রাতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ঘিরে ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহেদিন ও তার সহযোগী আদনান স্কুটিতে করে ঘটনাস্থলে আসে। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা মাংস বিক্রির উদ্দেশ্যে একটি বাছুর হত্যা করেছিল। বাছুরের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এ সময় আদনান পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও শাহেদিনকে আটক করে স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
পুলিশ এসে গুরুতর আহত অবস্থায় শাহেদিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পুলিশ আদনানকে গোহত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে।
তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা মোহিত চৌধুরী জানান, ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের জড়ো হওয়ার কারণেই এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নিহত শাহেদিনের পরিবার অভিযোগ করেছে যে, গণপিটুনির ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। তারা পুলিশের প্রতি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। এদিকে, এলাকায় উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কায় পুলিশ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকার সংস্থাগুলোসহ বিভিন্ন মহল থেকে দ্রুত বিচার এবং গণপিটুনির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করা হয়েছে।
ভারতে গোহত্যা একটি স্পর্শকাতর ইস্যু। অনেক রাজ্যে গোহত্যা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ এবং এ সংক্রান্ত আইন রয়েছে। তবে এই ঘটনায় বিচার বহির্ভূত হত্যার প্রবণতা এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা ও তার প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক তীব্র হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, গণপিটুনির ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের এখনই সময়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।