প্রকাশ: ৫ আগস্ট ২০১৯, ১৯:১৬
প্রতিদিনের মতো আজও ডেস্কে বসে আছি আর ঠিক সেই পুরনো কাজ করে যাচ্ছি, সংবাদ প্রকাশ বা কোন সংবাদের সম্পাদনা। কিন্তু আজ মনটা ভীষণ রকম খারাপ বলবো না শুধু , এখনো ভীষণ ভারী হয়ে আছে হৃদয়টা।নিজেকে বেশ অপরাধী মনে হচ্ছে কোন কারনে।কেন অপরাধী মনে হচ্ছে বলছি বিস্তারিত; তবে তার আগে একটু বলে নিচ্ছি যে, বেশ কিছু দিন ধরে দৈনিক গড়ে ৫ টির অধিক ধর্ষণের সংবাদ প্রকাশ করতে হচ্ছে আমাদের।তবে সেদিন বার্তা সম্পাদক আমি এবং আমাদের প্রধান উপদেষ্টা বসেছিলাম একটি মিটিং নিয়ে কিছু বিষয় আলোচনা করার জন্য।
এর মধ্যে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা বলছেন যে, এই যে , প্রতিদিন আপনারা ধর্ষণের এতো সংবাদ করেন ভালো কথা।কিন্তু বাবা মেয়েকে ধর্ষণ করছে এই সংবাদগুলো কি একটু বাড়িয়ে প্রকাশ করছেন কি?তিনি এই কথা বলার পর আমি বার্তা সম্পাদকের দিকে আর তিনি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। কি উত্তর দিবো একে অন্যকে তাই মনে হয় বলছিলাম !এর মধ্যে বার্তা সম্পাদক ৩ মেয়ের বাবা আমি এক মেয়ের বাবা!তাই একটা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বার্তা সম্পাদক উত্তর দিলেন। হয়তো এমনটাই হচ্ছে , না হলে প্রতিনিধিরা কই পাবে।
কি বলবো বলেন,দৈনিক গড়ে ৫ টির অধিক ধর্ষণ এর সংবাদ প্রকাশ করতে হচ্ছে আমাদের । তার মধ্যে এই সংবাদটা প্রকাশ করতে ইচ্ছে হয় না তবু করতে হচ্ছে অপরাধ বিবেচনাতে। কি যে বলি উপদেষ্টা সাহেব ; দুনিয়াটা কেমন যেন হয়ে গেছে। আমি কথাটা টেনে নিয়ে বল্লাম সাহেব আমারও এসব বিশ্বাস হয় না, বাবা কি করে এই নিকৃষ্ট কাজটি করবেন। তবে হা কেউ না কেউ এই নিকৃষ্ট কাজটি করে যাচ্ছেন।
এই বলে দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে মীটিং শেষ করলাম একটু তাড়াহুড়ো করেই।কারন যে আমার একটু হসপিটাল যেতে হবে।হসপিটালে আসলে যাবো একটু গল্প করতে।বেশ কিছু দিন ধরে সন্ধ্যার পরে গল্প করতে যাই এক মেজর জেনারেল এর সাথে। তিনি মেডিসিনের বেশ অভিজ্ঞ একজন ডাক্তার এবং বন্ধুসুলভ মানুষ। তার কাছে গেলে আমার জ্ঞানের পরিধি একটু হলেও বাড়ে । বেশ অভিজ্ঞত রয়েছে তার বাংলাদেশ এবং ইতিহাসে, তাই সময় পেলে যাই সঠিক ইতিহাস শুনতে বা সমসাময়িক বিষয় নিয়ে গল্প করতে। ঠিক রাত ৯ টার পরে আমাদের গল্প শুরু হবে তাই অপেক্ষা করছিলাম।
তারপর ও জিজ্ঞেস করলাম কি করে এমন পাষণ্ড কাজটি বাবা করলেন? তিনি বল্লেন আমার ২ টি মেয়ে, একটি ৯ বছরের অন্যটি ১৩ এর মধ্যে। ৯ বছরের মেয়েটির সাথে এই ক্ষমার অযোগ্য কাজটি তিনি করেছেন।আমি ২ টা মেয়ে নিয়ে ভীষণ বিপদে আছি ভাই, আল্লাহ যেন কেন আমাক মেয়ে দিলেন।তাই আজ আমার এই কষ্ট।বেশি কথা বাড়াতে চাচ্ছিলাম না তারপর ও জিজ্ঞেস করলাম আপা, আপনার স্বামী কি করেন?
বল্লেন কিছু করে না নিজেদের বাড়ী আছে, সারাদিন ঘুমিয়ে কাঁটায় সন্ধ্যা হলে বের হবেন আর 'বাবা' খাবেন অথবা নেশা পানি খেয়ে রাতে আসবেন।আর আমার চোখের আড়াল হলে মেয়েদের উপর অত্যাচার করবেন। আর বুঝতে আমার বাকি থাকলো না কি দিয়ে কি হয়েছে।'নেশা' বা মাদক যে নিজের অস্তিত্বকে অস্বীকার করিয়ে দেয়, নিজের রক্তের সাথে বেইমানী করে তা আমি জানি। যাই হোক কোন ভাবে তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে স্যার এর রুমে গেলাম।সেই মা আর মেয়ে স্যার এর কাছে এসেছিলেন, কিন্তু স্যার তাঁকে পরামর্শ দিলেন ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যেতে।