নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটের কারণে প্রায় দুই লাখ মানুষের চিকিৎসা সুবিধার অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ৫০ শয্যার হাসপাতালের চিকিৎসকের মোট ১৮ টি পদ থাকলেও বর্তমানে ৫ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এতে প্রতিদিন প্রান্তিক জনপদ থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা তাদের কাক্ষিখত চিকিৎসা সেবা থেকে বি ত হচ্ছে। অফিস চলাকালিন সময়ে শুধু হাসপাতালের বর্হিবিভাগে প্রতিদিন প্রায় তিন শত রোগীর ভিড়ে উপ-সহকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দিয়ে চিকিৎসা প্রদান করতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রাণীনগর উপজেলাবাসির সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১৯৮৪ইং সালে স্থাপিত হয়।
দীর্ঘদিন থেকে চিকিৎসক ও ওষুধ সংকটের কারণে রোগীরা সুচিকিৎসা থেকে বি ত হচ্ছে। বর্তমানে অল্প জনবল দিয়ে কর্তৃপক্ষ রোগীদের যথারীতি চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য সেবার মান আরো বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১০ইং সালে স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর ১৯ শয্যা বিশিষ্ট তিন তলা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করে। ২০১২ইং সালের মার্চ মাসে নির্মাণকৃত ভবনটি হস্তান্তর করা হলেও অদ্যবদি পর্যন্ত মোট ৫০ শয্যার হাসপাতালটি আজও পূর্ণাঙ্গ ভাবে চালু না হওয়ায় রোগীদের ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে। ভর্তিকৃত রোগীরা চাহিদা মত শয্যা না পেয়ে অনেক সময় মেঝেতেই চিকিৎসা সেবা নিতে বাধ্য হয়।
জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে উপজেলা পরিষদ স্থাপিত হওয়ার সাথে ১৯৮৪ইং সালে উপজেলা সদরের পশ্চিম বালুভরা মৌজায় ৬.২৫একর জমি সরকার ক্রয় করে প্রথমে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা সঠিক ভাবে প্রদান করার লক্ষ্যে স্থাণীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম এমপি’র একান্ত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নত করার লক্ষ্যে ১৯ শয্যা বিশিষ্ট তিন তলা ভবন নির্মাণ কাজ শেষে ২০১২ইং সালে হস্তান্তর হলেও ওই ওয়ার্ডের জনবল, ওষুধ, রোগীদের খাদ্যসহ অন্যান্য উপকরণের সংকটের কারণে প্রায় সাড়ে ৭ বছর ধরে নির্দিষ্ট বরাদ্দ না পাওয়ায় আত্যাধুনিক ভবনের কার্যক্রম চালু করতে পারছেন না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান।
তবে আশার বাণী আগামী বছরে জুন মাসের দিকে দেশের অন্যান্য উপজেলার মত রাণীনগর হাসপাতালেও রাজস্ব খাত থেকে বরাদ্দ আসতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। প্রতিদিন প্রায় বর্হি বিভাগে ৩ শ’ ৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। এরমধ্যে থেকে প্রায় ২০ জনের মত রোগী সুচিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়। মাঝে মধ্যেই প্রকট আকারে শয্যা ও ওষুধ সংকটের কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়। অনেক সময় মেঝে ও বারন্দায় ফেলে চিকিৎসা দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনী জনবল এবং রোগীদের খাদ্য সরবরাহের অনুমোদন না থাকাই এই ভবনের কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। ফলে আন্তঃবিভাগ রোগীদের দূর্ভোগ থেকেই যাচ্ছে। ওষুধ সংকটের কারণে রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনে চিকিৎসা করাতে হয়। এতে গরিব রোগীদের ক্ষেত্রে ওষুধ কিনে খেতে কষ্ট সাদ্য হয়ে দাঁড়ায়।
উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপরেশন থিয়েটার থাকলেও অযতœ আর অবহেলায় তা পরিত্যাক্ত হয়ে আছে। একটি মাত্র পুরাতন এক্সরে মেশিন আছে যা খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। হাসপাতালের ভিতরে বড় মাপের মানসম্পূর্ণ স্টোর রুম না থাকাই নতুন ভবনের আসবাবপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী অপরেশন থিয়েটার সহ যত্রতত্র মালসামানা ফেলে রাখতে হয়। বর্তমানে হাসপাতালের মোট ১৮টি পদের মধ্যে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারসহ ১৩ টি পদ শূন্য থাকায় প্রতিদিন প্রান্তিক জনপদ থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা তাদের কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা থেকে বি ত হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা: কেএইচএম ইফতেখারুল আলম খান বলেন, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারসহ মোট ১৩ টি পদ শূন্য রয়েছে। তারপরও রাণীনগরবাসির যথাযথ চিকিৎসা সেবা দিতে আমাদের পেশাদ্বারিত্বের কোন ঘার্তি নেই। প্রয়োজনীয় অসুবিধা গুলো সমাধান করা গেলে রাণীনগরবাসি আরো ভাল স্বাস্থ্য সেবা পাবে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।