আত্রাইয়ে তীব্র শীত, দুশ্চিন্তা বাড়ছে কৃষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই প্রতিনিধি, নওগা:
প্রকাশিত: শুক্রবার ২০শে ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:০২ অপরাহ্ন
আত্রাইয়ে তীব্র শীত, দুশ্চিন্তা বাড়ছে কৃষকদের

নওগাঁর আত্রাইয়ে শীতের তীব্রতা বেড়ে গিয়ে জনজীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়। ঘন কুয়াশা, তীব্র শৈত্যপ্রবাহ এবং হিমেল বাতাসের সঙ্গে ঝিরিঝিরি তুষারপাতের কারণে শীতকালীন সবজি ও রবিশস্যের আবাদে দেখা দিয়েছে বড় সংকট। কয়েকদিনের শীতজনিত প্রতিকূল পরিবেশ কৃষকদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তুলেছে।


কৃষকের দুশ্চিন্তা

উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা জানিয়েছেন, আলু, সরিষা এবং অন্যান্য সবজি ক্ষেতগুলোতে লেটব্লাইট বা পাতার মড়ক রোগ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। ভবানীপুর গ্রামের কৃষক মো. আজাদ সরদার বলেন, "এবার আলুর আবাদ করেছি কয়েক বিঘা জমিতে। কিন্তু তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় আলুর পচন রোগ হলে সব স্বপ্ন ভেঙে যাবে। সার, বীজ, সেচের খরচও বেড়েছে। এতে আমাদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে।"


গন্ডগোহালী গ্রামের কৃষক ফরিদ জানান, তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। তিনি বলেন, "আমার জমিতে আলুর গাছ ভালো হয়েছে। তবে আবহাওয়ার কারণে ফলন নিয়ে শঙ্কায় আছি।"


ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আয়েন উদ্দিন বলেন, "লালপাকরী জাতের আলু চাষ করেছি প্রায় সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে। কোনো দুর্যোগ না হলে ভালো ফলনের আশা করছি। তবে শীতের তীব্রতা আমাদের উদ্বিগ্ন করছে।"


শীতজনিত সংকট ও প্রতিক্রিয়া

কনকনে শীতের ফলে শিশু ও বৃদ্ধদের পাশাপাশি গবাদি পশুর শীতজনিত রোগ বাড়ছে। এতে প্রান্তিক খামারি ও কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। একইসঙ্গে, কামলার সংকটের কারণে চাষাবাদেও দেখা দিয়েছে সমস্যা।


উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শীতের প্রভাবে বোরো বীজতলা ও শীতকালীন সবজি আবাদে প্রভাব পড়তে পারে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, "আগাম সতর্কতা হিসেবে বীজতলা ঢেকে রাখা এবং আলু জমিতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।"


আধুনিক পদ্ধতির পরামর্শ

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মার্জিয়া পারভিন জানান, "কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কীটনাশক ব্যবহার না করে আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগে পোকামাকড় দমন সম্ভব। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ লক্ষ্যে কাজ করছেন।"


কৃষকদের দাবির প্রেক্ষিতে কৃষি মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে জরুরি সহায়তা প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়েছে। শৈত্যপ্রবাহ দীর্ঘস্থায়ী হলে কৃষি আবাদ ও অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।