ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কয়েকদিন ধরে হিমেল বাতাস এবং কনকনে শীতের কারণে খেটে খাওয়া মানুষদের দিনযাপন দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমিক, রিকশাচালক ও দিনমজুররা, যারা শীতের কারণে কাজ করতে পারছেন না।
এ অঞ্চলে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ফলে শীতের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে শিশু, বয়স্ক এবং নিম্ন আয়ের মানুষের উপর। শীতের কারণে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজকর্মে এক ধরনের স্থবিরতা দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে কুয়াশার দাপটে রাস্তাঘাট আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে, এবং হিমেল বাতাসের কারণে বাইরে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।
রিস্কাচালক বাবুল মিয়া জানান, ঘন কুয়াশার কারণে রাতের বেলা গাড়ি চালাতে সমস্যা হচ্ছে। শীতের কারণে অটো রিকশা চালাতেও বেশ কষ্ট হচ্ছে। ভ্যানচালক ভুট্টু জানান, হাড়কাঁপানো শীতে তার হাত-পা নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে, ফলে ভ্যানের হাতলে হাত রাখা সম্ভব হয় না। তিনি বলেন, “খুব কষ্টে এক বেলা রিকশা চালাচ্ছি।"
এছাড়া শীতজনিত রোগব্যাধি বেড়ে যাওয়ার কারণে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় বেড়েছে। শিশু এবং বয়স্করা বিশেষত সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মো. নিজাম উদ্দিন জানান, শীতের কারণে সর্দি, কাশি এবং নিউমোনিয়া সহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ছে। তিনি সবাইকে শীত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
উপজেলা প্রশাসনও শীতার্তদের সাহায্যের জন্য একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন জানান, ইতিমধ্যে ২০০টি কম্বল শীতার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে এবং আরও কম্বল বিতরণ করা হবে। প্রশাসন থেকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে যাতে দুঃস্থ ও অসহায় মানুষরা শীতের কষ্ট থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পেতে পারেন।
এমন পরিস্থিতিতে শীতজনিত দুর্ভোগ কাটাতে আরো দ্রুত সহায়তা এবং উদ্যোগ প্রয়োজন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।