মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বুধবার (১১ ডিসেম্বর) মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে ২ হাজার ১১১ জন বাদ যাচ্ছেন। এসব ব্যক্তির বয়স ১২ বছর ৬ মাসের কম, যা মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত বয়সসীমার চেয়ে কম।
ফারুক ই আজম বলেন, "মুক্তিযোদ্ধাদের বয়সের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় যে ১২ বছর ৬ মাসের সীমা নির্ধারণ করেছে, তার চেয়ে কম বয়সী ২ হাজার ১১১ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ পড়বেন।" তিনি আরো বলেন, "অনেক অভিযোগ রয়েছে যে, মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও কিছু ব্যক্তি তালিকাভুক্ত হয়েছেন এবং তাদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করেছেন, যা জাতির সাথে প্রতারণা।"
উপদেষ্টা আরও বলেন, "যারা মুক্তিযোদ্ধা নয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং আদালতের মাধ্যমে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তবে যদি তারা স্বেচ্ছায় মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে নিজেদের বাদ দেন, তবে তাদের সাধারণ ক্ষমা দেয়া হতে পারে।"
তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি জানান, এটি একটি সময়সাপেক্ষ কাজ, এবং মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্য হলো শুধুমাত্র সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা রক্ষা করা।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে ভাতা প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৪ জন, যার মধ্যে ৪৬৪ জন বীরাঙ্গনা, ৫ হাজার ৮৯৫ জন যুদ্ধাহত, ৫ হাজার ৩৩৩ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং ৩৬৮ জন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। মোট ভাতা প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার ৫০ জন।
ফারুক ই আজম জানান, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ প্রাপ্তদের সংখ্যা ৮৯ হাজার ২৩৫ জন। এছাড়া, শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা ৫৬০ জন।
রাজাকারের তালিকা সম্পর্কেও তিনি জানান, "আমার কাছে রাজাকারের তালিকা নেই এবং মন্ত্রণালয়েও এ বিষয়ে কোনো ফাইল নেই। তাই বর্তমানে রাজাকারদের তালিকা তৈরি করা সম্ভব নয়, যেহেতু এটি ৫০ বছর আগের ঘটনা এবং অনেকেই এখন কোথায় আছেন, তা বের করা অত্যন্ত কঠিন।"
এভাবে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া এখনও চলমান রয়েছে, এবং এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় তার কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।