নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ভাসানচরে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) পৌঁছেছেন ১১১ পরিবারের ৫০৬ জন রোহিঙ্গা। এই রোহিঙ্গাদের নিয়ে মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০ হাজার। নৌবাহিনীর চারটি জাহাজের মাধ্যমে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে তাঁদের ভাসানচরে নিয়ে আসা হয়।
নৌবাহিনী সূত্রে জানা যায়, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তত্ত্বাবধানে কক্সবাজার থেকে বানৌজা পেঙ্গুইন, ডলফিন, টুনা ও বানৌজা তিমিতে ৯০১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে আনা হয়। জাহাজ থেকে নামানোর পর রোহিঙ্গাদের নৌবাহিনীর পন্টুন সংলগ্ন হ্যালিপ্যাডে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখান থেকে গাড়ির মাধ্যমে বিভিন্ন ক্লাস্টারে স্থানান্তর করা হয়।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (ভাসানচর) মো. মাহফুজার রহমান জানান, “এই ৫০৬ জন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে এসেছেন।” তিনি আরও জানান, ভাসানচর সম্পর্কে ধারণা নিতে যাওয়া ৩৯৫ জন রোহিঙ্গাও ফেরৎ এসে ভাসানচরে পৌঁছেছেন।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, কক্সবাজারের ঘনবসতিপূর্ণ আশ্রয় শিবির থেকে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সেখানে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করছে।
ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু জাফর বলেন, “নৌবাহিনীর চারটি জাহাজে রোহিঙ্গারা এসেছেন। তিনটিতে রোহিঙ্গা এবং একটিতে মালামাল নিয়ে আসা হয়েছে। স্থানান্তর প্রক্রিয়ার সময় পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপস্থিত ছিলেন।”
প্রসঙ্গত, নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রকল্প ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর শুরু হয়, যখন প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা সেখানে পৌঁছান। এরপর মোট ২৪ ধাপে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে এসেছে।
সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে, যেখানে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। পুরো প্রকল্পের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।