বিচারাধীন ৬ লাখ: মামলার অগ্রগতি নেই, উদ্বেগ বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌরভ নূর , বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১০ই অক্টোবর ২০২৪ ০৩:১৮ অপরাহ্ন
বিচারাধীন ৬ লাখ: মামলার অগ্রগতি নেই, উদ্বেগ বাড়ছে

নারায়ণগঞ্জের ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ সাতজনের অপহরণের ঘটনা এখনও স্মৃতিতে ঘুরপাক খাচ্ছে। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই চাঞ্চল্যকর মামলায় ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি বিচারিক আদালত সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এরপর উচ্চ আদালতেও ২০১৮ সালের ২২ আগস্ট ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রাখে। তবে পরবর্তী ৬ বছরেও সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।


এ ঘটনা দেশের বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা এবং মামলাজটের সমস্যা উন্মোচন করে। বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ২৭,৮০৬, যা ২০১৯ সালে ছিল ২১,৮১৩। হাইকোর্টে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯২৬, যা একই সময়ে ছিল ৫ লাখ ৬ হাজার ৬৬৪।


অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক জানান, চাঞ্চল্যকর মামলাগুলোর দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হবে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিপুলসংখ্যক মামলা আটকে থাকাটা উদ্বেগজনক। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, রাষ্ট্রপক্ষকে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।


উল্লেখ্য, বিচারিক আদালতের রায়ের পর থেকে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না। অধিকাংশ আসামি এখন কারাগারের কনডেম সেলে রয়েছেন, যার ফলে তাদের পরিবার ও সমাজে অনিশ্চয়তা বাড়ছে।


এই পরিস্থিতিতে বিচারকের সংখ্যা ও অবকাঠামো সংকটের কারণে মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্ব হচ্ছে। বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, দ্রুত বিচারের মাধ্যমে জনসাধারণের আস্থা ফিরে পাওয়া জরুরি। 


সুপ্রিমকোর্টের বিভিন্ন বেঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলি শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে, যার মধ্যে আবরার ফাহাদ হত্যা, বিশ্বজিৎ হত্যা, এবং খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলা অন্তর্ভুক্ত। এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি না হলে বিচারপ্রার্থীদের হতাশা ও উদ্বেগ বাড়তে থাকবে। 


বিচার বিভাগের দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে, এবং দ্রুততম সময়ে এসব মামলার নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।