শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লার ভাগাড় অপসারণের দাবিতে মহাসড়কে শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
এহসান বিন মুজাহির জেলা প্রতিনিধি , মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৯শে আগস্ট ২০২৪ ০৯:১০ অপরাহ্ন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লার ভাগাড় অপসারণের দাবিতে মহাসড়কে শিক্ষার্থীরা

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে পৌরসভার ময়লার ভাগাড় অপসারণের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলার তিনটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।


বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের সামনে জমায়েত হন শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ, দি বার্ডস রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার কয়েকশ ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকবৃন্দ।পরে সেখান থেকে শত শত শিক্ষার্থী একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শ্রীমঙ্গল চৌমুহনায় (ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে) বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে করেন। 


মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন,

শিক্ষার্থীরা বলে, তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ, দি বাডস্ রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার সামনে পৌরসভার বড় ময়লার ভাগাড়। প্রতিদিন পুরো শহরের ময়লা-আবর্জনা এখানে ফেলা হয়। ময়লার গন্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস করা কষ্টকর। নাক-মুখ চেপে রেখে ক্লাস করতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে এটি চলে আসছে। এখানে ময়লার ভাগাড় থাকায় কুকুরের আনাগোনা বেশি। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীরা কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন।


এছাড়া ভাগাড়ের পাশে রয়েছে আরও দুটি আবাসিক এলাকা। মশা, মাছির উপদ্রব ও ময়লার দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর নাভিশ্বাস অবস্থা বিরাজ করছে। এ সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এ ভাগাড় সরানোর জন্য বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও কিছুই করা হয়নি। 


২০১৭ সালে সাবেক কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ আশ্বাস দিয়েছিলেন ৬ মাসের মধ্যে ময়লার ভাগাড় সরানো হবে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টা ড.মোহাম্মদ ইউনুস ও পরিবেশ উপদেষ্টার নিকট দাবি রাখেন অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লার ভাগাড় সরিয়ে তাদেরকে সুস্থ পরিবেশে পড়ালেখা করার সুযোগ দিতে।


মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা পৌরসভার প্রশাসক, মৌলভীবাজার জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছাম্মৎ শাহিনা আক্তার এর নিকট দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।


জানা যায়, পৌর কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ময়লা ফেলার জন্য বিগত ২০১৩ সালে সদর ইউনিয়নের জেটি রোডে হাওর এলাকার পাশে জেলা প্রশাসক মৌলভীবাজার এর মাধ্যমে ২ একর ৪৩ শতক ভূমি অধিগ্রহন করে। কিন্তু তৎকালীন স্থানীয় সদর ইউনিয়ন চেয়াম্যান ও সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় ওই এলাকায় ময়লা না ফেলার জন্য বিরোধীতা শুরু করেন। এরই প্রেক্ষিতে কৌশলে হাই কোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়। মামলার বাদীর মৃত্যু হলেও আদালতের স্থগিতাদেশ এর কারণে এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।


এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল পৌরসভা প্রশাসক এডিসি মোছাম্মৎ শাহিনা আক্তার জানান, প্রথমে তিনি ময়লার ভাগাড় ও অধিগ্রহনকৃত স্থান পরিদর্শন করবেন, তারপর মহামান্য হাইকোর্টে দ্রুত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করার আবেদন করবো। এরপর সবাইকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে এটান স্থায়ী সমাধান করা হবে।



প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৮ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লার ভাগাড় অপসারণের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে নেমেছিল স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার হাজারো শিক্ষার্থী। সে সময় জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করলেও শিক্ষার্থীদের দাবি ছয় বছরেও পূরণ হয়নি।