প্রতাপনগরে প্রাক্তন চেয়ারম্যানসহ নিহত- ৯, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে সেনাবাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক
সচ্চিদানন্দদেসদয়, আশাশুনি উপজেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষিরা
প্রকাশিত: বুধবার ৭ই আগস্ট ২০২৪ ০৯:৪২ অপরাহ্ন
প্রতাপনগরে প্রাক্তন চেয়ারম্যানসহ নিহত- ৯, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে সেনাবাহিনী

আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরে ছাত্র জনতার বিজয় মিছিলে প্রতাপনগর ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ জাকির হোসেনের বাড়ি থেকে আগ্নেয়াস্ত্রের ছোড়া গুলিতে ৩ জন নিহত, ১৫/২০ জন আহত এবং বিক্ষুব্ধ জনতার গণপিটুনিতে প্রতিপক্ষের ৬ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বাদ জোহর নামাজে জানাযা শেষে মিছিলে অংশ নেওয়া নিহতদের দাফন করা হয়েছে। 


৫ আগস্ট সোমবার শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে পালানোর খবর জানার পর ছাত্র-জনতা আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলটি নাকনা গ্রামে সাবেক চেয়ােরম্যানের  মিছিলে সাবেক চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে পৌছলে কেউ কেউ হামলার চেষ্টা করলে বাড়ি থেকে গুলি করা হয়। গুলিতে মিছিলে থাকা প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহুনিয়া গ্রামের আরেজ মোড়লের ছেলে হাফেজ আনাছ বিল্লাহ (১৬), কল্যাণপুর গ্রামের নুর হোসেন ঘরামীর ছেলে আবুল বাশার আদম (১৬), কোলা গ্রামের আব্দুর রহিম সরদারের ছেলে আলম হোসেন (১৬) নিহত হন। এ সময় প্রতাপনগর গ্রামের আব্দুস সাত্তার সরদারসহ অন্তত ২০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। 


এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার গ্রামবাসী সাবেক চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে গণপিটুনি দিলে ইউনিয়ন আ'লীগ সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন, আরিফের ছেলে আসিব হোসেন, শাহজুরের ছেলে সাকের আলী, আজুয়ারের ছেলে সজীব ও সিরাজুলের ছেলে শাহিন নিহত হন।

অবশ্য উত্তেজিত জনতা শেখ জাকিরের স্ত্রী ও কন্যাকে নিরাপদে চলে যেতে সহায়তা করলে তারা চলে যান বলে জানাগেছে। 


প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আবু দাউদ ঢালী বলেন, সোমবার বিকেলে কয়েকশ লোক মিছিল নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান জাকিরের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তার বাড়িতে ইট পাটকেল ছোড়ে। একপর্যায় বিক্ষুব্ধ জনতা চেয়ারম্যানের বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে তিনি (জাকির) বাড়ির দোতলা থেকে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ১০-১২ জন আহত হন। 


এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা তার বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। আহতদের চারজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে হাফেজ আনাছ বিল্লাহ, আদম আলী ও আলমগীর মারা যায়। খবর পেয়ে বিক্ষুব্ধরা জাকিরের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। একপর্যায়ে বাড়িতে ঢুকে জাকির ও তার সঙ্গে থাকা শাকের, জাহাঙ্গীর, শাহিন আলম, সজীব ও আশিককে কুপিয়ে মেরে ফেলে। এ সময় বাড়িতে থাকা জাকিরের স্ত্রী ও মেয়েদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। 


এ বিষয় জানার জন্য আশাশুনি থানার ওসি বিশ্বজিত অধিকারির মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও ফোনটি রিসিভ হয়নি। ৬ আগস্ট সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।