পঞ্চগড়ে ঈদের দিনে পরকীয়া প্রেমিকের হাতে শাহনাজ পারভীন (২৪) নামের এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের মতিয়ারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গৃহবধূ শাহনাজ ওই এলাকার আব্দুল মজিদের স্ত্রী।
নিহত গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। একই সাথে থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। তবে খুনিকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ একটি ছুরি ও রক্তমাখা একটি প্যান্ট জব্দ করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, স্বামী আব্দুল মজিদ ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করার ফাঁকে প্রতিবেশী আইনুল হকের ছেলে রাজুর (২৭) সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন গৃহবধূ শাহনাজ পারভীন।
৮-৯ মাস আগে কিছুদিন নিখোঁজ ছিলেন ওই গৃহবধূ। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়। পরে বাড়ি ফিরলে স্বামী তাঁকে গ্রহণ করতে রাজি হননি। এ জন্য তিনি একটি মামলা করেন।
মামলার পর আবার দুজন সমঝোতায় সংসার করতে রাজি হন। চার মাস আগে স্বামীর সাথে ঢাকায় চলে যান তিনি। তাঁদের সংসারে সাত বছরের একটি কন্যাসন্তান ও তিন মাসের একটি ছেলে রয়েছে। গত মঙ্গলবার ঈদ করার জন্য পঞ্চগড়ে ফেরেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর স্বামীসহ পরিবারের লোকজন ঈদের নামাজ পড়তে গেলে পরকীয়া প্রেমিক রাজু শাহনাজের ঘরে ঢুকে ছুরি নিয়ে তাঁর ওপর আক্রমণ করেন।
গলা কেটে তাঁকে হত্যা করে। এ সময় শাহনাজের মেয়ে মাইশা আক্তার চিৎকার করলে পালিয়ে যান রাজু। প্রতিবেশীরা ছুটে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় শাহনাজকে ঘরের মেঝেতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত গৃহবধূর মেয়ে মাইশা আক্তার বলে, ‘আমার মাকে ছুরি দিয়ে মেরে দৌড়ে পালিয়ে গেছে রাজু।
নিহত গৃহবধূর স্বামী আব্দুল মজিদ বলেন, ‘রাজুর সাথে আমার স্ত্রী মোবাইলে কথা বলত। চলেও গিয়েছিল তার সাথে। তাকে একটি মোবাইল ফোনও দিয়েছিল সে। পরে আমার নামে মামলা করে। আমি সন্তানদের দিকে চেয়ে তাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যাই। রাজু দীর্ঘদিন ধরেই আমাকে হুমকি দিয়ে আসছিল যে আমাকে শাহনাজের সাথে সংসার করতে দেবে না। আজ আমরা সবাই নামাজে গেলে আমার স্ত্রীর গলা কেটে হত্যা করেছে সে। আমি এই খুনির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
দেবীগঞ্জ থানার ওসি সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম বলেন, ‘ওই গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। আমরা একটি ছুরি ও রক্তমাখা প্যান্ট জব্দ করেছি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। অভিযুক্ত রাজুকে গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।