নারী সার্জেন্ট এর সহায়তায় ফুটপাতেই সন্তান প্রসব মায়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার ১১ই মার্চ ২০২৩ ১০:২৯ পূর্বাহ্ন
নারী সার্জেন্ট এর সহায়তায় ফুটপাতেই সন্তান প্রসব মায়ের

নারী পুলিশের এক সার্জেন্টের সহায়তায় রাজধানীর ব্যস্ত রাস্তার ফুটপাতে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক মা। মা ও শিশু দুজনই ভালো আছেন। পুলিশের গুলশান ট্রাফিক বিভাগের এডিসি হাফিজুর রহমান রিয়েল তার ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানিয়েছেন।


রিয়েল জানান, শুক্রবার (১০ মার্চ) বিকেলে নতুন বাজার এলাকায় প্রতিদিনের মতো ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন সার্জেন্ট মোর্শেদা। দায়িত্বরত অবস্থায় ঢাকার চাকা পরিবহন কাউন্টারের একজন স্টাফ তাকে জানান, পাশে এক নারী অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন। এ কথা শোনার পর তিনি দ্রুত ট্রাফিক কনস্টেবল তানিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ফুটওভার ব্রিজ পার হয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে দেখতে পান, সেই নারী প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছেন। একপর্যায়ে তিনি যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে মাটিতে শুয়ে পড়েন।


ওই নারীকে নেওয়ার মতো কোনো ভবন আশপাশে ছিল না। এ অবস্থা দেখে সার্জেন্ট মোর্শেদা ও কনস্টেবল তানিয়া দ্রুত বাস কাউন্টার থেকে কয়েকটি ছাতা নিয়ে আসেন। সেই ছাতায় চারপাশ আড়াল করে ওই নারীকে সন্তান প্রসবে সহযোগিতা করেন। কিছুক্ষণ পর একটি শিশুর জন্ম হয়।


কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় নাড়ি কাটা নিয়ে। সার্জেন্ট মোর্শেদা ৯৯৯-এ কল করে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সের সাহায্য চান। সেই অ্যাম্বুলেন্সে করে মা ও নবজাতককে পাঠানো হয় কাছের উপশম হাসপাতালে। মা ও নবজাতক দুজনেই ভালো আছেন বলে রিয়েল তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন।


এ বিষয়ে সার্জেন্ট মোর্শেদা বলেন, ‘আমি সড়কের যানজট কমানো নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এর মধ্যে এক ব্যক্তি এসে জানাল নতুন বাজারে ফুটওভার ব্রিজের নিচে একজন নারী অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন। আমি দ্রুত ফুটওভার ব্রিজ পার হয়ে তার কাছে যাই। যাওয়ার পর তাকে আগলে ধরি। এক পথচারী নারীকে সহায়তা করতে অনুরোধ করি। অল্প সময়ের মধ্যেই সন্তান প্রসব হয়ে যায়। পরে আমি অ্যাম্বুলেন্স কল করে পাশের উপশম হেলথ পয়েন্টে পাঠাই। আমিও মোটরসাইকেলে অ্যাম্বুলেন্সের পেছনে যাই। বর্তমানে দুজনই সুস্থ আছেন।’


মোর্শেদা আরও বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আমি অনুরোধ করেছি, যাতে চিকিৎসা ব্যয়ে ডিসকাউন্ট দেয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডিসকাউন্ট দেওয়ার কথা দিয়েছে। পরিবারটি গরিব।’


ওই নারীর স্বামী একটি রেষ্টুরেন্টের কর্মচারী। তারা রাজধানীর বেরাইদ এলাকায় থাকেন। তারা স্বামী-স্ত্রী ভাগনির বাসা থেকে ফিরছিলেন।


নতুন বাজারের উপশম হেলথ পয়েন্টের ডিউটি অফিসার মো. নাঈম বলেন, ‘মা ও নবজাতক সুস্থ আছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বিষয়টি জানেন।’