শিশু সুমাইয়া কি পারবে আবার স্কুলে যেতে ?

নিজস্ব প্রতিবেদক
আতিকুর রহমান, জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: শনিবার ১৩ই আগস্ট ২০২২ ০৭:২৬ অপরাহ্ন
শিশু সুমাইয়া কি পারবে আবার স্কুলে যেতে ?

সুমাইয়া খাতুন ১১ বছরের এক ফুটফুটে শিশু কন্যা। প্রচন্ড মেধাবী আর অদম্য ইচ্ছাশক্তি আছে তার মধ্যে। কিন্তু ইচ্ছা থাকলে কি হবে ? এখন তার দিন কাটে বিছানায় শুয়ে বসে। হাটতে না পারায় ইচ্ছা থাকার পরও যেতে পারে না স্কুলে। কারণ সুমাইয়ার বাম পায়ের হাটুতে টিউমারের সঙ্গে হাড়ে বাসা বেঁধেছে মরণব্যাধী ক্যান্সার। 


মাঝে মাঝে প্রচন্ড ব্যাথায় কুঁকড়ে ওঠে ছোট্ট শিশু সুমাইয়া। কিছুটা সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন ৬ প্রকারের ওষুধ খেতে হচ্ছে। চিকিৎসক বলেছেন একটি অপারেশ সুমাইয়াকে সুস্থ করে তুলতে পারবে। সুমাইয়া ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের আলামপুর বেলে খাল পাড়ার ভ্যান চালক ফারুক মুন্সির মেয়ে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সাড়ে চার মাস আগে সুমাইয়া পড়ে গিয়ে হাটুতে আঘাত পায়। 


তাকে ঝিনাইদহ শহরের ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হলে সুমাইয়াকে ঢাকা মহাখালী হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। সেখানে অনকলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ সিরাজুস সালেহীন পরীক্ষা নিরিক্ষা করে সুমাইয়ার বাম পায়ের হাটুর হাড়ে টিউমারের সঙ্গে ক্যান্সার সনাক্ত করেন।


 চিকিৎসক তাদেও জানান, তিন মাসের মধ্যে অপারেশ করা গেলে সুমাইয়া সুস্থ হয়ে উঠবে। এতে প্রয়োজন হবে দুই লাখ ৭৫ হাজার টাকা। কিন্তু দিনমজুর পিতার পক্ষে মেয়েকে চিকিৎসা করানোর কোন অর্থ নেই। চিকিৎসকের আশ^স্ত বানীতে সন্তানকে বাঁচাতে দিনমজুর এই পরিবারটির মনে মাঝেমধ্যে আশার আলো ঝলমলিয়ে উঠলেও আর্থিক অসঙ্গতি তাদের গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত করছে।


 সুমাইয়ার পিতা ফারুক মুন্সি জানান, ঢাকায় নিয়ে মেয়ের পরীক্ষা নিরিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যায় করাতে এক মাসে দেড় লাখের বেশি টাকা খরচ করেছেন। এলাকার মানুষের কাছে আর কত হাত পাতা যায় ? চিকিৎসক তিন মাস পর অপারেশনের জন্য যেতে বলেছেন, কিন্তু এতো টাকা আমি কোথায় পাবো ? 


সুমাইয়ার মা লাভলী বেগম জানান, মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। ছোট ছোট সন্তানরা পিতার সঙ্গে ভ্যান চালায়, পরের ক্ষেতে কামলা খাটে সুমাইয়ার চিকিৎসার জন্য। সুমাইয়া জানায়, সে গোপীনাথপুর সরকারী প্রাইমারি স্কুলে চতুর্থ শ্রেনীতে পড়তো। 


এক বছর সে অসুস্থতার কারণে ঝিনাইদহ শহর ছেড়ে পিতা মায়ের সঙ্গে নানা বাড়ি চলে এসেছে। এখন নানা বাড়িতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করছে তারা। তীব্র ব্যাথায় কাতর সুমাইয়া শনিবার বিকালে জানায়, “আমাকে ভালো করার জন্য আব্বা ও ছোট ভাইয়া জোন (কামলা) বিক্রি করছে। আর আপনারা একটু সহায়তা করলে আমি এবার সুস্থ হয়ে মাদ্রাসায় ভর্তি হবো”।


 কিন্তু অবুঝ সুমাইয়া জানেন না জোন বিক্রি করে দুই মাসে প্রায় তিন লাখ টাকা জোগাড় করা সম্ভব না। কেবল সমাজের বিত্তবান ও প্রবাসি রেমিটেন্স যোদ্ধারা এগিয়ে আসলেই কেবল শিশু সুমাইয়াকে বাঁচানো সম্ভব।


সুমাইয়ার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ০১৯৯৮-৪১০৫৫৮ (নগদ ও রকেট) ও পিতা ফারুক মন্সি ০১৮৫৩-২৪১৮৮৮।