শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে পুলিশের হামলায় অন্তত দশজন আহত করার পরে ক্ষমা চাইতে হলো পুলিশকে। বুধবার (৩ আগস্ট) রাত পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের চরমালগাঁও ভাদুরীকান্দি গ্রামের সরদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (০৪ আগস্ট) চরমালগাঁও ভাদুরীকান্দি গ্রামের জয়নাল মল্লিকের মেয়ে নুপুর আক্তারের (১৯) বিয়ে। বুধবার রাতে নুপুরের গায়ে হলুদ ছিল। গায়ে হলুদ শেষে রাত পৌনে ১২টার দিকে চার তরুণী সাউন্ড বক্সের তালে নাচ করছিল। ডামুড্যা থানার এসআই ফোয়াদ হোসেনসহ দুজন কনস্টেবল বশিরুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমান পুলিশের পিকআপ থেকে নেমে হঠাৎ বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে পেয়ারা গাছের ডাল দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে পেটাতে থাকেন। এসময় বিয়ে বাড়ির লোকজন পেটানোর পেছনে কী কারণ জানতে চাইলে তখন পুলিশ বলে সাউন্ড বক্স বাজাস কেন? এ সময় পুলিশের পিটুনিতে দশজন আহত হয়। তাছাড়া বিয়ে বাড়ির বেশ কয়েকটি চেয়ার ভেঙে ফেলে পুলিশ।
আহতরা হলেন- পেয়ারা বেগম (৬০), মো. শরীয়াতুল্লাহ সরদার (২৬), শামীম ব্যাপারী (১২), আমানুল্লাহ সরদার (৩৫), চৈতি আক্তার (২৪), মীম আক্তার (১৪), স্বপ্না আক্তার (১৫), সুমী আক্তার (১৪)। বাকি দুজনের নাম জানা যায়নি।
পরে আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। তখন ষাটোর্ধ এক নারী গুরুতর আহত হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাত দেড়টার দিকে ডামুড্যা থানার এসআই সজল কুমার পালসহ পাঁচজনের পুলিশের একটি দল বিয়ে বাড়িতে গিয়ে এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
আহত পেয়ারা বেগম বলেন, আমি দাঁড়িয়ে আমার ভাতিজির গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান দেখছিলাম। হঠাৎ পেছন থেকে আমাকে লাঠি দিয়ে বেশ কয়েকটি আঘাত করে। আমি মাটিতে পড়ে যাই। পরে দেখি পুলিশ। আমি হাঁটতে পারি না, মনে হয় পেছনের হাড় ভেঙে গেছে। আমি এর বিচার চাই।
মেয়ের চাচা ফারুক ভান্ডারি ও আহত আমানুল্লাহ সরদার, শামীম ব্যাপারী, চৈতি বলেন, পুলিশ এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিতে পারত। তা না করে মারধর শুরু করে, যা অমানবিক। আমরা এর বিচার দাবি করছি।
ধানকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম মাওলা রতন বলেন, আমার ইউনিয়নে একটি বিয়ে বাড়িতে রাতে সাউন্ড বক্স বাজাচ্ছিল। পুলিশের এসআই ফোয়াদ ও দুইজন কনস্টেবল এসে বিয়ে বাড়ির লোকজনকে গাছের ডাল দিয়ে মারধর করে ও চেয়ার ভাঙচুর করে, যা দুঃখজনক। শুধু তাই নয় আমার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেছে ফোয়াদ।
ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফ আহমেদ বলেন, রাতে ওই এলাকায় উচ্চ সাউন্ডে বক্স বাজাচ্ছে এমন ঘটনায় ৯৯৯-এ ফোন দেয়। পরে আমি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। সেখানে পুলিশের সঙ্গে বিয়ে বাড়ির লোকজনের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে শুনি। পরে আবার এসআই সজলসহ পাঁচ পুলিশের একটি দল বিয়ে বাড়িতে পাঠাই। তারা ঘটনাটি শুনে দুঃখ প্রকাশ ও সমাধান করে চলে আসে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।