বাবা আর নেই (!) জানেনা মোবিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
এস এম তারেক হোসেন, জেলা প্রতিনিধি মেহেরপুর
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৩শে নভেম্বর ২০২১ ১০:১২ অপরাহ্ন
বাবা আর নেই (!) জানেনা মোবিন

বাবার লাশ চোখের সামনে। নিথর দেহের দিকে তাকিয়ে রয়েছে মোবিন। কিন্তু জানেনা বাবা আর ফিরে আসবেনা। বুঝছেনা পিতা আর কোলে জড়িয়ে খাবেনা মুখে চুমু। ঘুরবেনা বাড়ির পাশের চিরচেনা মেঠোপথে। তবে হাজারও লোকের ভীড়ে কাউকে খুঁজছে সেটা তার চোখের চাহনীতে ফুটে উঠছে।


২১-শে নভেম্বর সকালে অফিসে যাওয়ার মুহূর্তে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হন মোমিনুল ইসলাম। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি গাংনী প্রেস ক্লাবের সদস্য ও দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকার গাংনী উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন। পরবর্তীতে মেহেরপুর জজ কোর্টের পেশকারের (বেঞ্চ সহকারী) চাকরি পেলে ছেড়ে দেন সাংবাদিকতা ও প্রেসক্লাবের সদস্য পদ।


মোমিনুল ইসলামে ১০মাস বয়সী শিশু পুত্র সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত বাবা যে দুনিয়ার জীবন শেষ করে পরকালের পথে পাড়ি জমিয়েছে সে কথা জানেনা। আর জানার কথাও না। সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা বোঝার বয়স এখনো তার হয়নি যেমনটি হয়েছে তার মা কিংবা দাদির ক্ষেত্রে। 


মা-বাবার একমাত্র সন্তান ছিলেন মোমিনুল ইসলাম। অল্প সময়েই বাবাকে হারিয়ে মায়ের কোলে স্থান নিতে হয়েছিল। তার মতো নিয়তির বিধান তার একমাত্র পুত্র মোবিনকেও পিতার অভাব এনে দিলো।


মোবিনের দাদি মোমেনা খাতুন জানালেন, অফিস থেকে এসেই ছেলের নাম ধরে ডাকতো মোমিনুল। বুকে জড়িয়ে নিয়ে চলে  যেতো রাস্তায়। হেটে হেটে মাঠের পথ ও দোকানের পাশে বসে আড্ডা মারতো।


মোবিনের নানা আবাদুল মান্নান জানালেন, আমি এই অবুজ শিশুটির দিকে তাকাতে পারছিনা। সে এখনও বুঝতে পারছে না তার বাবা নেই। কে দেখবে এখন এই অবুজ শিশুটিকে। কে এখন বাবা নামের বটবৃক্ষের মত ছাঁয়া দেবে তাকে। বাড়িতে অনেক লোকজন এসেছে। সে এখন তাদের দিকে তাকাচ্ছে।মনে মনে তার বাবাকে খুঁজছে।


এদিকে ইট বোঝায় যে লাটাহাম্বা মোমিনুলের জীবন চিরতরে শেষ করে দিয়েছে সে লাটাহাম্বা চালককে মোমিনুলের মা মোমেনা খাতুনের মামলার প্রেক্ষিতে গ্রেফতার করে লাটাহাম্বাটি হেফাজতে রেখেছে গাংনী থানা পুলিশ।