প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:১৩
রোজা পালন করা মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর ফরজ। আল্লাহ তাআলা ঈমানদারদেরকে লক্ষ্য করে বলে দিয়েছেন যে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেভাবে তোমাদের আগের লোকদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩) রোজা রাখার এ ফরজ বিধান কাদের জন্য? সেসব মুসলিম নারী-পুরুষ কারা? যাদের ওপর বাধ্যতামূলক রমজান মাসের রোজা পালন করাকে ফরজ করা হয়েছে। ইসলামি শরিয়তে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা দিয়েছে।
যাদের জন্য রোজা পালন বাধ্যতামূলক। তারা হলো-
>> প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে।
যখন আশুরার রোজা ফরজ ছিল তখন আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে রোজা রাখাতাম। আর খাবারের জন্য কান্না করলে তাদেরকে তুলা দিয়ে তৈরি আকর্ষণীয় খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখতাম। আমরা এটা করতাম ইফতারের সময় পর্যন্ত।’ (বুখারি)
>> নিজ ঘরে অবস্থানকারী হতে হবে।
>> শারীরিকভাবে রোজা রাখার সক্ষমতা থাকতে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয় কিংবা রোজা রাখলে জীবন নাশ হতে পারে এ পরিস্থিতি হয় তবে তার জন্যও রোজা বিধান সহজ। আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ কিংবা সফরে থাকে তবে সে অন্য সময় তা পালন করবে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৪)
>> নারীদের হায়েজ ও নেফাস থেকে মুক্ত থাকতে হবে।
তবে তারা রোজা হুকুমের আওতায় এসে যাবে। সেক্ষেত্রে তাদেরকে ইফতারের সময় পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে ইসলাম গ্রহণকারী, বালেগ হওয়া ছেলে-মেয়ে কিংবা পাগলের আগের রোজা আদায় তাদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। কেননা আগের রোজাগুলো অবস্থার প্রেক্ষিতে তাদের ওপর আবশ্যক ছিল না।
>> যারা মাঝে মাঝে পাগল হয়ে যায় আবার মাঝে মাঝে ভালো হয়ে যায় তবে ভালো থাকার সময় তাদের জন্য রোজা রাখা আবশ্যক। রোজা অবস্থায় যদি কেউ পাগল হয়ে যায় কিংবা অজ্ঞান হয়ে যায় তবে তাদের জন্য রোজা হুকুম বাতিল হবে না।
>> রমজান মাসে কোনো মানুষ মারা গেলে অবশিষ্ট রোজা রাখায় তাদের জন্য কোনো হুকুম নেই। আত্মীয়দের পক্ষ থেকে মৃত ব্যক্তির রোজা রাখায়ও বাধ্যবাধকতা নেই।
>> যদি কেউ রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার ব্যাপারে অজ্ঞতায় থেকে রোজা না রাখে, তবে কোনো কোনো আলেমের মতে সে ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হবে না। রোজা ফরজ হওয়ার বিষয়টি জানার পরপর তার ওপর রোজা রাখা বধ্যতামূলক।
>> আবার কেউ যদি রমজান মাসের দিনের বেলায় অজ্ঞতাবশত হারাম না জানার কারণে স্ত্রীর সঙ্গে যৌনতা তথা সহবাসে মিলিত হয় তবে অধিকাংশ আলেমের মতে সে দোষী সাব্যস্ত হবে না।
মনে রাখতে হবে, মুসলিম এলাকায় বসবাস করে রোজা ফরজ কিনা কিংবা সহবাস হারাম কিনা এ বিষয়ে জানা নেই বললে এ ওজর গ্রহণযোগ্য নয়। রোজা ফরজ হওয়া সংক্রান্ত বিষয়গুলো যারা জানে তাদের কাছ থেকে জেনে নেয়া সবার জন্য আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের ফরজ রোজা পালনে এর হুকুম-আহকাম জেনে নেয়ার তাওফিক দান করুন। রমজানের ফরজ রোজা যথাযথ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
ইনিউজ ৭১/এম.আর