প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১১:১৭
মাহে রবিউল আউয়াল ইসলামী মাসগুলোর মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব ও মহত্ত্বসম্পন্ন। এই মাসে সমগ্র জগতের জন্য রহমত হিসেবে শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আগমন আলোকিত মক্কার মরুপ্রান্তর ও চিরবাস্বর মদিনাতুল মুনাওয়ারাহের জন্য বিশেষ বরকত বয়ে এনেছে। কোরআনে আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেন, রসূল (সা.) গোটা সৃষ্টি জগতের জন্য রহমত, যা তাঁর নবুয়তের মহত্ত্বকে প্রমাণ করে।
রবিউল আউয়াল মাসের মাহাত্ম্য শুধু নবীর জন্মেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এই মাসে ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যমণ্ডিত ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর জীবন ও কর্মগুণ, মিরাজ ও আরশে আল্লাহর সঙ্গে আলাপ, মদিনায় হিজরত, মসজিদে কুবার নির্মাণ—এসব ঘটনা এই মাসের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করেছে। নবীর এই কর্মকাণ্ড এবং তাঁর আদর্শ উম্মতে মুহাম্মদী ও গোটা মানবজাতির জন্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
মাহে রবিউল আউয়ালে নবীর আগমনের ঘটনা মুসলিম উম্মাহর কাছে উৎসাহ, উচ্ছাস ও নবীপ্রেমের প্রতীক। এই মাসে মুসলিমদের উচিত নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ শরীফ পাঠ ও মিলাদ শরীফের মাধ্যমে নবী (সা.)-এর মহত্ত্ব, আদর্শ ও সুন্নত অনুসরণ করা। নবীর প্রতি ভালোবাসা হৃদয়ে সঞ্চারিত হলে তা ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে সাফল্য ও নাজাতের পথ সুগম করে।
রবিউল আউয়াল মাসে মহান আল্লাহর হাবিবের প্রতি প্রিয়তার শিক্ষা অনুসরণ করে মানুষকে নৈতিক ও আত্মিক উন্নয়নের দিকে পরিচালিত করা যায়। নবীর আদর্শ, শিক্ষণীয় আচরণ এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্য।
এ মাসের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পায় মা খাদিজাতুল কুবরা (রা.)-এর সঙ্গে নবীর বিবাহ, হিজরতের যাত্রা ও মসজিদে কুবা নির্মাণের মতো ঘটনাবলির কারণে। প্রতিটি মুহূর্ত ও দিবস মুসলমানদের জন্য স্মরণীয় ও শিক্ষণীয়, যা নবী (সা.)-এর প্রতি শ্রদ্ধা ও আনুগত্যের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে।
মাহে রবিউল আউয়াল মুসলিম উম্মাহর জন্য নবীর আগমনের আনন্দ, বরকত ও প্রেরণার উৎস। এ মাসকে কেন্দ্র করে ভক্তিমূলক ইবাদত ও ভালো কাজের মাধ্যমে নবী (সা.)-এর আদর্শে আলোকিত হওয়া সম্ভব।
এই মাসে নবীর প্রতি ভালবাসা ও আনুগত্য প্রদর্শন করা মানে আল্লাহর কাছে সন্তুষ্টি লাভ এবং পরকালীন নাজাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা। মাহে রবিউল আউয়াল আমাদের জন্য শিক্ষা, আনন্দ ও নৈতিকতার এক অমূল্য মাস, যা মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকে।
লেখক হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী বলেছেন, মাহে রবিউল আউয়ালের বরকত, নবীর মহব্বত ও সুন্নত অনুসরণের মাধ্যমে উম্মতে মুহাম্মদী চিরকাল প্রগতি ও মুক্তিলাভে সাফল্যমণ্ডিত হবে।