প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১০:১২
মানব জীবনে ন্যায়, সততা ও সত্যবাদিতা এমন গুণাবলি যা শুধু দুনিয়ায় শান্তি আনে না, বরং আখিরাতের মুক্তির পথও প্রশস্ত করে। ইসলামে এ গুণগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তায়ালা বারবার ন্যায় ও সত্যের প্রতি অটল থাকার নির্দেশ দিয়েছেন এবং অন্যায়, প্রতারণা ও মিথ্যার বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কতা জারি করেছেন।
সূরা আন-নিসা’র ১৩৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “হে মুমিনগণ! তোমরা ন্যায়ের উপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকো, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সাক্ষ্য দাও, যদিও তা তোমাদের নিজেদের বিরুদ্ধে হয় বা পিতা-মাতা ও আত্মীয়স্বজনের বিরুদ্ধে হয়।” এই আয়াত প্রমাণ করে যে ন্যায়ের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের কোনো সুযোগ নেই, বরং সত্যের পথে থাকতে হলে নিজের স্বার্থ ত্যাগ করতেও দ্বিধা করা যাবে না।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “সত্য মানুষকে সৎকর্মের দিকে নিয়ে যায় এবং সৎকর্ম মানুষকে জান্নাতে পৌঁছে দেয়।” (বুখারি ও মুসলিম) এই হাদিসে স্পষ্ট যে সত্যবাদিতা মানুষের চরিত্রকে উন্নত করে এবং শেষ পর্যন্ত তা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ খুলে দেয়।
অন্যদিকে, ইসলামে প্রতারণা ও মিথ্যাচারকে বড় পাপ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। কুরআনে বলা হয়েছে, “মাপ ও ওজন পূর্ণ করো এবং মানুষের প্রাপ্য কমিও না” (সূরা হূদ: ৮৫)। এ আয়াত শুধু ব্যবসা-বাণিজ্যে নয়, জীবনের সব ক্ষেত্রে ন্যায় ও সততার নির্দেশ দেয়।
বর্তমান সময়ে সামাজিক জীবনে নানা প্রলোভন ও স্বার্থের কারণে মানুষ প্রায়ই সত্য থেকে সরে যায়। কিন্তু একজন মুসলিমের জন্য এটা অত্যন্ত জরুরি যে তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রে ন্যায়পরায়ণ থাকবেন, নিজের অবস্থান বা ক্ষমতা যাই হোক না কেন।
ন্যায়ের পথে থাকতে হলে আল্লাহভীতি বা তাকওয়া অপরিহার্য। কারণ তাকওয়া মানুষকে সব ধরনের অন্যায় থেকে বিরত রাখে। আল্লাহভীতি হৃদয়ে না থাকলে আইন বা সামাজিক নিয়মও মানুষকে সত্যের পথে রাখতে ব্যর্থ হয়।
ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী, একজন মুমিনের চরিত্র হবে এমন যে মানুষ তার কাছ থেকে ন্যায়, সততা ও নিরাপত্তা প্রত্যাশা করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) এর জীবন থেকেও আমরা দেখতে পাই, তিনি শত্রুর সঙ্গেও ন্যায় ও সততার সাথে আচরণ করেছেন।
অতএব, মুসলমানদের উচিত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশ অনুযায়ী ন্যায়, সততা ও সত্যবাদিতার চর্চা করা। এভাবে আমরা দুনিয়ায় শান্তি ও আখিরাতে মুক্তি লাভ করতে পারব।