প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৩
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জীবনের প্রতিটি দিকেই পথনির্দেশনা দিয়েছেন। দুনিয়ার সফলতা এবং আখিরাতের মুক্তির জন্য তিনি এমন কিছু আমল শিখিয়েছেন, যা অল্প পরিশ্রমে অনেক ফজিলতের দ্বার খুলে দেয়। এর মধ্যে একটি হলো—রিজিক বৃদ্ধির জন্য সকালে নির্দিষ্ট কিছু দোয়া ও আমল। নবী করিম (সা.) সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই আল্লাহর কাছে রিজিকের জন্য দোয়া করতেন এবং সাহাবাদেরও তা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন, 'হে আল্লাহ! আমার জন্য আসমান ও জমিনের বরকতের দরজা খুলে দাও' (তিরমিযি)।
ইসলামে রিজিক শুধু টাকার হিসাব নয়, বরং শান্তি, সময়, স্বাস্থ্য, ভালো সন্তান, হালাল উপার্জন—এসবই রিজিকের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ বলেন, 'যে আমার ভয় করে, আমি তার জন্য অচিন্তনীয় জায়গা থেকে রিজিক এনে দেই' (সূরা তালাক: ২-৩)। তাই ভয়ের পরিবর্তে আল্লাহভীতিই জীবনের সফলতার চাবিকাঠি।
প্রিয় নবী (সা.)-এর আরেকটি সুন্নত হলো ফজরের পর কাজ শুরু করা। তিনি বলেন, 'হে আল্লাহ! আমার উম্মতের জন্য সকালকে বরকতময় করে দাও' (আবু দাউদ)। যারা ফজরের পর ঘুমিয়ে না গিয়ে রিজিকের খোঁজে বের হন, তাদের ওপর আল্লাহর বিশেষ রহমত বর্ষিত হয়।
অন্যদিকে, হালাল রিজিকের জন্য সকালবেলা ইস্তিগফার ও দুরুদ শরীফ পড়ার গুরুত্বও অনেক। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তিগফার করে, আল্লাহ তাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেন, সংকট থেকে পরিত্রাণ দেন এবং অচিন্তনীয় জায়গা থেকে রিজিক দেন' (আবু দাউদ)।
তাই আমাদের উচিত প্রতিদিন সকাল শুরু হোক দোয়া ও ইবাদতের মাধ্যমে। ফজরের নামাজ পড়ে অল্প কিছু সময় আল্লাহর জিকির, ইস্তিগফার ও দুরুদে ব্যয় করলেই জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বরকত আসতে শুরু করবে। ছোট এই আমলগুলো দীর্ঘ জীবনের কঠিন পথ সহজ করে দেয়।
রিজিক বৃদ্ধির জন্য কেউ চাইলে এই দোয়াটি প্রতিদিন সকালে পড়তে পারেন—"আল্লাহুম্মাক্ফিনি বিহালালিকা আন হারামিকা, অগ্নিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক" (হে আল্লাহ! হালাল দ্বারা আমাকে হারাম থেকে বাঁচাও এবং তোমার অনুগ্রহে আমাকে অন্যের মুখাপেক্ষী হওয়া থেকে রক্ষা করো)।
জীবনের যেকোনো চাওয়া-পাওয়া হোক হালাল ও বরকতময়, এজন্য আমাদের নিয়মিত দোয়া ও আমলে লেগে থাকা উচিত। কারণ, বরকতের রিজিক আসলে শুধু পরিমাণে বড় নয়—বরং তা অন্তরে প্রশান্তি ও দেহে শান্তির ছোঁয়া নিয়ে আসে। আল্লাহ যেন আমাদের সকলকে হালাল ও বরকতময় রিজিকের রাস্তা দেখান।