রমজান মাস মুমিনদের জন্য বিশেষ রহমত ও বরকতের মাস। এ মাসে সৎ ও মুত্তাকি বান্দারা আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগ পান। মাহে রমজানের শেষ দশকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো এতেকাফ। এটি এমন এক ইবাদত, যার মাধ্যমে বান্দা নিজেকে আল্লাহর ইবাদতে নিবিষ্ট করতে পারে। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ আমল অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করতেন এবং উম্মতকে উৎসাহিত করতেন।
হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) জীবনের শেষ পর্যন্ত রমজানের শেষ দশকে এতেকাফ করেছেন। পরে তাঁর স্ত্রীগণও তা অনুসরণ করেন। (বুখারি) দৈনন্দিন ব্যস্ততার কারণে অনেকেই আল্লাহর ইবাদতের জন্য পর্যাপ্ত সময় পান না। তাই এতেকাফের মাধ্যমে বান্দা একাগ্রচিত্তে ইবাদত করতে পারেন।
এতেকাফ অবস্থায় একজন মুমিন মসজিদে অবস্থান করে আল্লাহর স্মরণে নিমগ্ন থাকেন। এ সময় তিনি কোরআন তিলাওয়াত, নামাজ ও দোয়ায় মনোযোগী হন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি একদিন এতেকাফ করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবেন। (বায়হাকি)
এতেকাফকারী ব্যক্তি বাইরের কাজকর্ম থেকে বিরত থাকলেও তিনি জানাজা, রোগী দর্শন কিংবা জনকল্যাণমূলক কাজে শরিক হতে না পারলেও এসবের সওয়াব লাভ করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এতেকাফকারী সব গুনাহ থেকে মুক্ত থাকেন এবং অন্যান্য আমলকারীর সমান সওয়াব অর্জন করেন। (ইবনে মাজাহ)
রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের এতেকাফে উৎসাহিত করতেন এবং এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি রমজানের শেষ দশ দিন এতেকাফ করবে, সে দুইটি হজ ও দুইটি ওমরার সওয়াব লাভ করবে। (বায়হাকি) তাই এতেকাফের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
এতেকাফের অন্যতম ফজিলত হলো, এতেকাফরত ব্যক্তি লাইলাতুল কদরের মহিমান্বিত রাত পেয়ে যান। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। তাই প্রত্যেকের উচিত ব্যস্ততার ঊর্ধ্বে উঠে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য এ ইবাদত করা।
রমজানে অল্প আমল করেও বেশি নেকি লাভ হয়, আর এতেকাফে সেটি বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। এটি বান্দার জন্য আল্লাহর এক বিশেষ অনুগ্রহ। তাই যারা সক্ষম, তাদের উচিত রমজানের শেষ দশকে এতেকাফ করা।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই মহান ইবাদতের সুযোগ দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।