৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর এবার দেশব্যাপী রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি। আগামী ১২ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দলটি ৯ দিনের সভা-সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে জনমত গঠন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং রাষ্ট্রে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি তুলে ধরা। দলের শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন জেলা সফর করে এসব কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
বিএনপি নেতারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনী পরিকল্পনা এখনো অস্পষ্ট। ফলে নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ, তাই অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ। বিএনপি মনে করে, কেবল নির্বাচিত সরকারই দেশের স্থিতিশীলতা ফেরাতে সক্ষম।
ঢাকাসহ দেশের ৬৭টি সাংগঠনিক জেলায় পর্যায়ক্রমে সভা-সমাবেশ হবে। এসব কর্মসূচিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন। প্রতিটি সভায় ব্যাপক জনসমাগমের জন্য কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রমজানের আগে এই কর্মসূচি শেষ করার পরিকল্পনা থাকলেও, এরপরও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।
রমজানে বিএনপি কোনো বড় কর্মসূচি রাখছে না, তবে ইফতার মাহফিলের মধ্য দিয়েও তারা রাজনৈতিক বার্তা তুলে ধরবে। নেতারা বলছেন, সরকার যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেয়, তাহলে রমজানের পর আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, নির্বাচন বন্ধ রেখে সংস্কার সম্ভব নয়, বরং সংস্কার ও নির্বাচন একসঙ্গে চলতে হবে। বিএনপি মনে করে, একটি দেশ দীর্ঘ সময় ধরে নির্বাচন ছাড়া থাকতে পারে না, তাই দ্রুত নিরপেক্ষ ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিএনপি নেতাদের একটি প্রতিনিধি দল ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তারা জানতে চেয়েছে, নির্বাচন কমিশন ভোটের জন্য কতটা প্রস্তুত। ইসি জানিয়েছে, ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ চলমান এবং মে-জুনের মধ্যেই তারা পুরোপুরি প্রস্তুত হবে।
বিজয় দিবসে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে বা ২০২৬ সালের জুনে নির্বাচন হতে পারে। তবে প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি বলেছেন, ২০২৫ সালের শেষ দিকে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বিএনপি এই বিলম্ব নিয়ে আপত্তি তুলেছে এবং দ্রুত নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে।
আগামী কয়েক সপ্তাহে বিএনপির সমাবেশগুলোতে কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্ন জেলায় অংশ নেবেন। খুলনায় হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, লালমনিরহাটে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিরাজগঞ্জে নজরুল ইসলাম খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বরকত উল্লাহ বুলুসহ অন্যান্য নেতারা সমাবেশে বক্তৃতা করবেন। আন্দোলনের পরবর্তী ধাপ কী হবে, তা নির্ভর করছে সরকারের পদক্ষেপের ওপর।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।