টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনে অবৈধ সম্পদ জব্দের প্রস্তুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার ১০ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:১৪ পূর্বাহ্ন
টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনে অবৈধ সম্পদ জব্দের প্রস্তুতি

শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া হাজার হাজার কোটি টাকা ফেরাতে সরকার কাজ করছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনার ভাগনি ও সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের অবৈধ সম্পদ জব্দ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের দাবি অনুযায়ী, লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিকের মালিকানাধীন কোটি কোটি টাকার সম্পদ বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থে কেনা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে টিউলিপ, তার খালা শেখ হাসিনা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দুর্নীতির তদন্তে বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।


টিউলিপ সিদ্দিক দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন এবং তিনি লেবার পার্টির সদস্য হিসেবে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সিটি মিনিস্টার হিসেবেও কাজ করেছেন। তবে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি তিনি মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির তদন্ত করছে। একই সময়ে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে।


টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তিনি বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ দিয়ে লন্ডনে বিলাসবহুল সম্পত্তি কিনেছেন। সম্প্রতি তার মালিকানাধীন একটি ফ্ল্যাটের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে, যা তাকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত একজন ব্যবসায়ী উপহার দিয়েছিলেন। তবে অভিযোগ উঠেছে যে এই ফ্ল্যাট বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ দিয়ে কেনা হয়েছে। এছাড়াও, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে টিউলিপ, শেখ হাসিনা এবং তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে। দুদক এই অভিযোগ তদন্ত করছে এবং লন্ডনে টিউলিপের মালিকানাধীন ৭ লাখ পাউন্ড মূল্যের ফ্ল্যাটটি দুর্নীতির অর্থ দিয়ে কেনা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে।


শেখ হাসিনা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন। তার শাসনামলে বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন, গ্রেপ্তার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছিল। এছাড়াও, রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দুদকের ধারণা, রূপপুর প্রকল্প থেকে আত্মসাৎকৃত অর্থ দিয়ে লন্ডনে বিলাসবহুল সম্পত্তি কেনা হয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিকের ফ্ল্যাট ছাড়াও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের উত্তর লন্ডনে সাড়ে ৬ লাখ পাউন্ড মূল্যের একটি ফ্ল্যাটসহ ১৫ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ডের আরেকটি সম্পত্তি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ সরকার এই সম্পত্তিগুলো জব্দ করার চেষ্টা করছে এবং এর মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে কাজ করছে।