সর্বশক্তিমান আল্লাহ সবকিছুর নিয়ন্ত্রক, অস্ট্রেলিয়ায় সাম্প্রতিক আগুন ও পানির ভূমিকায় সেটা আবারও প্রত্যক্ষ করলো বিশ্ববাসী। কারণ কোনোক্রমেই অস্ট্রেলিয়ার ওই দাবানল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছিলো না। আগ্রাসী ওই দাবানলের কাছে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির সর্বোচ্চ উন্নতির পরও মানুষ কতো অসহায়। আর বৃষ্টি ও বন্যা ওমন দাবানলকে প্রশমিত করেছে কতোই না সহজে।
আগুন, পানি, মাটি, বাতাস আল্লাহতায়ালার নিদর্শনই শুধু নয়, আল্লাহ এসবের মাধ্যমে অবাধ্যদের শাসন, সত্যত্যাগীদের শাস্তি এবং অনাচারী-অপরাধীদের ধ্বংস সাধন করেন। পবিত্র কোরআনে এ বিষয়ে বিবরণ রয়েছে। আল্লাহ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, পৃথিবীর স্থল ও জলভাগে বিপর্যয় সৃষ্টি হয় মানুষের কৃতকর্মের ফলে (সূরা রুম : আয়াত ৪১)। সুতরাং, বলাই বাহুল্য, অস্ট্রেলিয়ার দাবানল ও বৃষ্টি-বন্যার মধ্যে রয়েছে স্বাভাবিক বোধসম্পন্ন মানুষের জন্য শিক্ষা।
মানুষ আল্লাহ তায়ালার শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি হলেও অনেকের কৃতকর্ম তাদের নিকৃষ্টতম জীব হিসেবে চিহ্নিত করছে। মানবিক মূল্যবোধ ও বিবেকের অনুশাসন তাদের মধ্য থেকে দ্রুত অপসৃত হচ্ছে। মানুষ অবলীলায় খুন, ধর্ষণ, লুটসহ নানা অপকর্ম ও অপরাধ করছে। এরফলে আল্লাহর অসন্তুষ্টি ক্রমাগত বাড়ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয় আপতিত হচ্ছে সে কারণেই।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে দাবানল, ঝড়বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টি, বন্যা, জ্বলোচ্ছাস, ভূমিকম্প এবং ভূমিধসসহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় বেড়ে গিয়েছে। আবহওয়ার এই পরিবর্তনের জন্য মানুষই দায়ী। বিজ্ঞানীরা আরও বলছেন, মানুষের অনাচার, অপকর্ম, লোভ ও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ এবং প্রাকৃতিক উপকরণ ও সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহার আবহাওয়ার পরিবর্তনকে অবশ্যম্ভাবী করে তুলছে। আর পৃথিবী ও মানুষকেই এর অনিবার্য খেসারত দিতে হচ্ছে এবং হবে।
কারণ, অস্ট্রেলিয়ার দাবানলের ধোঁয়া প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এখন দক্ষিণ আমেরিকায় পৌঁছে সেখানে তা প্রায় ২০ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থান করছে। ওই ধোঁয়া ১৭ দশমিক ৭ কিলোমিটার উঁচুতে উঠে গিয়েছে। যা এবং বায়ুর ৫ স্তরের দ্বিতীয় স্তরে (স্ট্রাটোমন্ডল) অবস্থান নিয়েছে। নাসার মতে, এই স্তরে ধোঁয়া একবার পৌঁছাতে পারলে হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিতে পারে। প্রভাবিত করতে পারে বিশ্বের বায়ুমন্ডলীয় পরিস্থিতিকে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপারনিকাস অ্যাটমসফিয়ার মনিটরিং সার্ভিসের তথ্যানুযায়ী, এই ধোঁযা ছড়িয়ে পড়েছে আটলান্টিক উপক‚লে এবং তা অস্বাভাবিক বড় মেঘে (যাকে বলে পাইরোকুমুলো নিম্বাস) রূপ নিয়েছে।
বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, এই বায়ু ও পুঞ্জিভ‚ত মেঘ বায়ুমন্ডলের অপূরণীয় ক্ষতি করতে পারে। যার অনিবার্য প্রতিক্রিয়া প্রতিফলিত হতে পারে বিশ্বের প্রকৃতি, পরিবেশ ও জীব বৈচিত্রের ওপর। তাতে বিশেষ বজ্রঝড়ের আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। এ প্রসঙ্গে বলা যায়, অস্ট্রেলিয়ায় ওই পরিস্থিতিতে এখন প্রবল বৃষ্টি, বন্যা এবং বজ্রঝড়ের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। শুধু অস্ট্রেলিয়া নয়, ওই দাবানলে ক্ষতির শিকার বিভিন্ন দেশ এবং মানুষও হতে পারে। কারণ বিশ্বের দেশসমূহ এক ছাতার নিচে অবস্থান করছে। কেউ কারও থেকে দূরে নয়, এখন তা সহজেই উপলব্ধি করা যাচ্ছে।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।