যশোর-খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চলে পানির সঠিক নিষ্কাশন নিশ্চিত করতে এক জরুরি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৭ নভেম্বর বিকালে, তালা উপজেলার উত্তরণ সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় জলবায়ু পরিবর্তন ও মুষলধারে বর্ষণজনিত পানি নিষ্কাশন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। সভার আয়োজন করে উত্তরণ সংস্থা এবং পানি কমিটি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উত্তরণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস কে মোঃ রাসেল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, কেশবপুর উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ইউসুফ মিয়া, তালা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মৃণাল কান্তি রায়, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল মালেক, কেশবপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস আর সাঈদ, এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা জানান, দক্ষিণাঞ্চলের এই তিনটি জেলা—যশোর, খুলনা এবং সাতক্ষীরা—এ অঞ্চলে পানি নিষ্কাশনের গুরুতর সমস্যা বিরাজমান। বর্ষার সময় অতিরিক্ত পানি জমে যাওয়ার ফলে খালের পানি প্রবাহ কমে যায় এবং জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, যার ফলে কৃষকরা তাদের জমিতে পানি সেচে চাষাবাদ করতে পারেন না এবং সামগ্রিকভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
সভায় বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয় যে, আপদকালীন পানি নিষ্কাশনের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে—পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়া সুইসগ্রেটগুলো থেকে পলি অপসারণ, নদীসমূহের নাব্যতা পুনরুদ্ধার এবং খালের পাটা অপসারণ। এতে করে পানি নিষ্কাশনের গতিবেগ বৃদ্ধি পাবে এবং খাল ও নদীগুলোর পানির প্রবাহে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এছাড়া, বক্তারা তাদের অভ্যন্তরীণ প্রশাসন এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে এই বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি সমন্বিত প্রচারমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। তারা আরও বলেন, পরিকল্পনাগুলোর সফল বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকারের সহযোগিতা এবং জনসাধারণের অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সভার শেষে, উত্তরণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শহিদুল ইসলাম আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতে দক্ষিণাঞ্চলে পানির সুষ্ঠু নিষ্কাশন এবং কৃষি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি আরো বলেন, "পানি সংকট ও জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের পাশাপাশি সমাজের সকল শ্রেণির অংশগ্রহণ এবং সচেতনতা সৃষ্টি জরুরি।"
উল্লেখযোগ্য, এই অঞ্চলে পানি নিষ্কাশনের সমস্যা একাধিক মৌসুমে কৃষির ক্ষতি এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বক্তারা জানান, যদি এই সমস্যা সমাধান না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে পরিবেশগত বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।