বাংলাদেশকে 'মিনি পাকিস্তান' বানিয়েছিল খালেদা জিয়া: আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ১৬ই আগস্ট ২০১৯ ০৫:৪২ অপরাহ্ন
বাংলাদেশকে 'মিনি পাকিস্তান' বানিয়েছিল খালেদা জিয়া: আইনমন্ত্রী

বিএনপির শাসনামলে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বাংলাদেশকে ‘মিনি পাকিস্তান’ বানিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আইন বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশকে হত্যার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। বাংলাদেশকে হত্যার জন্য যারা ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতা চায়নি, যারা আওয়ামী লীগের পতাকা তলে থেকে ১৯৭১ সালে ষড়যন্ত্র করেছিল যাতে বাংলাদেশ না হয়, পাকিস্তান থেকে যায়- সেই খুনি মোস্তাকরা আবার রাজাকার আলবদর নিয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তানে পরিণত করেছিল।

মন্ত্রী বলেন, শুধু চেষ্টা করে নাই, বাংলাদেশকে ২১ বছর প্রায় একটা মিনি পাকিস্তানে তৈরি করেছিল। জিয়াউর রহমানের পর তার স্ত্রী খালেদা জিয়া মুজাহিদ ও নিজামীকে মন্ত্রী বানিয়ে বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তান বানিয়েছিল। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করে। যা আজ উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রমাণ হয়েছে।

আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী দু’জন কোথায় আছেন তা আমরা জানি। চারজনের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। দু’জন যেখানে আছেন এর মধ্যে একজন কানাডা আরেকজন হচ্ছে আমেরিকা। আমেরিকা যিনি আছেন তাকে আমরা ফিরিয়ে আনব। কানাডায় যিনি আছেন কূটনৈতিক ও আইনি লড়াই করছি, ইনশাল্লাহ আমরা সফল হব। আখাউড়ার মাটিতে দাঁড়িয়ে বলতে চাই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা যে যেখানে আছেন সেখান থেকে ফিরিয়ে এনে এ রায় কার্যকর করা হবে।

শুক্রবার দুপুরে আখাউড়া রেলস্টেশন চত্বরে আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কুলখানি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মো. জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন, আইন সচিব গোলাম সারোয়ার, আখাউড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল কাশেম ভূইয়া, কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন, আখাউড়া পৌরসভার মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল, সাবেক পৌর মেয়র নূরুল হক ভূইয়া, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ সাপলু, সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন নয়নসহ দলীয় নেতাকর্মীরা।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ১৫ আগস্ট থেকে সরে এসে ১৬ আগস্ট তার ৭৫তম জন্মদিন পালন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া প্রত্যেকদিন জন্মদিন বদলায়। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস থেকে সরে এসে ১৬ আগস্ট খালেদা জিয়া তার ৭৫তম জন্মদিন পালন করছে। এই জন্মদিন প্রত্যেকদিন বদলায়। আজকে যদি তার জন্মদিন পালন করে তাহলে তো ৭৫তম জন্মদিন হবে না। তা হবে খালেদা জিয়ার প্রথম জন্মদিন। আইনমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা বসে নাই। তারা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আর বাংলাদেশকে নিয়ে যদি ষড়যন্ত্র ও ছিনিমিনি খেলার চেষ্টা করেন আর যদি গণতন্ত্র ব্যাহত করার চেষ্টা করেন তাহলে আইনীভাবে উচিৎ শিক্ষা দেওয়া হবে।

আইনমন্ত্রী আরো বলেন, ২১ বছর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বিচার তার পরিবার ও বাংলাদেশের জনগণ পায়নি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বিচার কাজ শুরু করে। ২০০১ সালে পর্যন্ত এ বিচার কাজ করতে পেরেছি। আবার ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেই বিচার বন্ধ করে দিয়ে ছিল। ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বঙ্গবন্ধুর এক খুনিকে ফেরত পাঠানোর পর আবার বিচার শুরু হয়। ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা ক্ষমতায় আসেন এই বিচার সমাপ্ত করার জন্য। আপনাদের প্রতি আহ্বান থাকবে বাংলাদেশে যেন এ রকম কালো রাত্রি আর না আসে। পরে ১৫ আগস্ট যারা শহীদ হয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব