প্রকাশ: ১ নভেম্বর ২০২৫, ২১:২৭

নারায়ণগঞ্জে এক ইসলামী সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামের আদর্শের কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের মুসলমানরা রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের পথের অনুসারী এবং মওদূদীর প্রতিষ্ঠিত মতাদর্শ এই দেশের মানুষের চিন্তাচেতনার অংশ নয়। তার ভাষ্য, ধর্মের নামে ফিতনা তৈরি ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর যে প্রবণতা রয়েছে, তা থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
শনিবার বিকালে শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত ‘আজমতে সাহাবা’ শীর্ষক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। তার বদলে সংগঠনের মহাসচিব সাজিদুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ জেলা আমির মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী। এতে বিএনপি, হেফাজত এবং জমিয়তে ওলামা ইসলামের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। বিভিন্ন বক্তা ইসলামের ঐক্য ও সহিষ্ণুতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং ধর্মকে বিভক্তির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের সমালোচনা করেন।
শেষ বক্তা হিসেবে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচন সামনে এলেই কিছু রাজনৈতিক পক্ষ ইসলামকে ব্যবহার করে মানুষকে বিভক্ত করার চেষ্টা করে। তার দাবি, একটি নির্দিষ্ট দল নির্বাচনকে সামনে রেখে ধর্মীয় আবেগকে রাজনৈতিক সুবিধার জন্য কাজে লাগাতে চায় এবং তা দেশের ঈমানদার মুসলমানদের জন্য বড় হুমকি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে অধিকাংশ মানুষ মদিনার ইসলামের অনুসারী এবং রাসুল (সা.) ও সাহাবাদের দেখানো পথই সত্য। তাই ধর্মের নামে ফিরকা ও মতবিভাজন তৈরি করে যারা উসকানি দেয়, তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকা জরুরি। তার মতে, সহীহ দ্বীনি শিক্ষাই মুসলমানদের প্রকৃত ঐক্য গড়তে পারে।

ধর্মের অপব্যবহার বন্ধ করা উচিত উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, দ্বীন প্রথম এবং দুনিয়া পরে। তাই রাজনৈতিক লাভের জন্য ইসলামকে ব্যবহার করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত জ্ঞান অর্জন করা এবং তা আমলে পরিণত করা, যাতে বিভ্রান্তির সুযোগ না থাকে।
সাবেক সরকারের সমালোচনা করে সালাহউদ্দিন বলেন, অতীতে একটি সরকার ইসলাম বিদ্বেষী রাজনীতি করেছে এবং আলেম সমাজকে অপদস্থ করেছে। তার মতে, সেই অযাচারী রাজনীতির পরিণতি জাতি নিজের চোখে দেখেছে এবং এখন মানুষের প্রত্যাশা ইতিবাচক পরিবর্তনের দিকে।
তিনি সবাইকে আদর্শিক ও নৈতিক রাজনীতির চর্চার আহ্বান জানান। তার দাবি, সদাচারণ ও সৎ রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমেই দেশ থেকে অপরাজনীতি দূর হবে এবং ইসলামের মর্যাদা রক্ষা পাবে।