প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ১০:১৭
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি ঐতিহাসিক ও বাধ্যতামূলক সামাজিক চুক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে চলেছে। এই সনদ এমন একটি জাতীয় ঐকমত্যের দলিল, যা কোনো রাজনৈতিক দল ভাঙার সাহস করবে না।
বুধবার (৩০ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন (এনসিসি) আয়োজিত দ্বিতীয় দফার সংলাপের ২২তম অধিবেশনে সাংবাদিকদের সঙ্গে চা-বিরতির সময় এসব কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই সনদ একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় সংলাপের মধ্য দিয়ে গঠিত হয়েছে, যেখানে দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল, নাগরিক প্রতিনিধি ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন। এটি একটি উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্মে সরাসরি সম্প্রচার হওয়ায় দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে, কারা কী বলেছেন।
তিনি জানান, এটি শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর নয়, বরং জাতির একটি সম্মিলিত বিবেকের বহিঃপ্রকাশ। জুলাই-আগস্টের ছাত্র অভ্যুত্থানের পটভূমিতে এই সনদ গণদাবি ও জাতীয় প্রতিশ্রুতির মিলিত রূপ, যা উপেক্ষা করার সাহস কোনো দলেরই নেই।
সংসদেই এই সনদ বাস্তবায়নের যথোপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে বলে মত দেন বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, সংসদই হবে এই সনদ বাস্তবায়নের একমাত্র মঞ্চ। সনদের একটি ধারায় বলা হয়েছে, সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে—এটি আমরা পূর্ণ সমর্থন করি।
সংস্কার প্রসঙ্গে বিএনপির অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কমিশনের ৮২৬টি প্রস্তাবের মধ্যে মাত্র ৫১টির সঙ্গে বিএনপির মতভেদ রয়েছে। এটাই প্রমাণ করে, বিএনপি সংস্কার প্রক্রিয়ায় আগ্রহী এবং বাস্তবসম্মত ভূমিকা রাখছে।
তিনি আরও জানান, সনদে স্বাক্ষরের আগেই অনেক সংস্কার অধ্যাদেশ উপদেষ্টা পর্যায়ে বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। ফলে বিএনপি সনদের পক্ষে অটল রয়েছে এবং এর বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আইনি কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির মতপার্থক্য প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, কেউ চাইলে আইনি কাঠামোও আসতে পারে। তবে জাতীয় ঐকমত্যের এই প্রক্রিয়া একটি নৈতিক ও গণতান্ত্রিক চুক্তি—যা রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার মাধ্যমে নিজেই আইনি শক্তিতে রূপ নিচ্ছে।