প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ১৮:৪
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে চলমান রাজনৈতিক টানাপোড়েনে নতুন দিগন্তের ইঙ্গিত মিলেছে বিএনপির অভ্যন্তর থেকে। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া স্পষ্টভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কোনও বিরোধে না জড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার পথ খুঁজতে হবে।
ঈদুল আজহার দিন গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এই পরামর্শ দেন। উপস্থিত নেতাদের তিনি প্রশ্ন করেন, "তাদের সঙ্গে আমাদের বিরোধটা কোথায়? তারা কি আমাদের প্রতিপক্ষ?"
বুধবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি জানান, বিএনপি নেত্রী চেয়েছেন সমঝোতার ব্যবস্থা করতে, যাতে অপ্রয়োজনীয় সংঘাতে জড়িয়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল না হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরও একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, নির্বাচনের তারিখ ইস্যুকে কেন্দ্র করে যেন অকারণে জটিলতা না বাড়ে, সে ব্যাপারে খালেদা জিয়ার স্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে। তিনি চেয়েছেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে নিতে।
এই প্রেক্ষাপটে লন্ডনে আগামী ১৩ জুন একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ড. ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই বৈঠকে নির্বাচন ও রাজনৈতিক সংস্কার প্রশ্নে ঐক্যমতের ভিত্তি তৈরির বিষয়টিই থাকবে কেন্দ্রে।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে মূল মতবিরোধ এখন সময়সূচিকে ঘিরে। ইউনূসের প্রস্তাব এপ্রিল মাস, আর বিএনপি চায় ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট। দুই পক্ষ সামান্য ছাড় দিলে সমঝোতা সম্ভব বলে ধারণা দিচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতারা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সম্ভাব্য বৈঠককে সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ইভেন্ট বলে আখ্যা দিয়েছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, এই আলোচনার মাধ্যমে অনেক জট খুলে যেতে পারে, তৈরি হতে পারে রাজনৈতিক সমঝোতার নতুন অধ্যায়।
এদিকে, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যেসব এজেন্ডা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলোরই প্রতিফলন থাকবে তারেক-ইউনূস বৈঠকে। বিএনপি নেতাদের প্রত্যাশা, আলোচনা হবে ফলপ্রসূ এবং তা দেশকে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাবে।