বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে মুসলমানদের বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বাংলা বর্ষবরণ বাঙালির নিজস্ব ঐতিহ্যের অংশ হলেও মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে এটি ভিন্ন সংস্কৃতির সাথে মিশিয়ে ফেলা হয়েছে, যা দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর বিশ্বাসের পরিপন্থী।
তার দাবি, গ্রামবাংলায় পয়লা বৈশাখ উদযাপনের নিজস্ব ঐতিহ্য ছিল, যেখানে প্রকৃতি ও প্রাণের ছোঁয়া ছিল স্পষ্ট। কিন্তু স্বৈরাচারী শাসনামলে পয়লা বৈশাখকে অন্যরকমভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যেখানে কলকাতার উচ্চবর্ণীয় হিন্দু সংস্কৃতির প্রভাব স্পষ্ট। ফলে দেশের মুসলমানদের বিশ্বাস ও অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টার কাছ থেকে ভিন্ন প্রত্যাশা করা হলেও হতাশার বিষয় হচ্ছে, মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম ও আয়োজন পরিবর্তন করা হয়নি। ইসলামী আন্দোলনের মতে, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে উপেক্ষা করে কোনো উৎসব সর্বজনীন করা যায় না।
সংগঠনটি মনে করে, সরকার যদি স্বৈরাচারী আমলে প্রচলিত সংস্কৃতিকে ধরে রাখে, তাহলে জনগণের মধ্যে হতাশা ছড়াবে এবং এর ফল ভালো হবে না। তাই পয়লা বৈশাখ উদযাপনের আয়োজন থেকে ইসলামের বিশ্বাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো বাদ দেওয়া উচিত।
বিবৃতিতে মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর আঘাত দিয়ে কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া সঠিক নয়। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মঙ্গল শোভাযাত্রার মতো আয়োজন পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।
এছাড়াও, তিনি বলেন, ঈদ ঘনিয়ে আসছে, কিন্তু এখনো অনেক শ্রমিক তাদের মজুরি পাননি। সরকারকে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে তারা পরিবার নিয়ে নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, ঈদযাত্রা যেন নিরাপদ হয়, সে জন্য সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে মহাসড়ক ও গণপরিবহনের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ঘরমুখী মানুষ নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন।
ইসলামী আন্দোলন মনে করে, ঈদের সময় দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা জরুরি। তিনি সরকারকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যেন কোনো স্বার্থান্বেষী মহল অস্থিরতা সৃষ্টি করতে না পারে এবং জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত না হয়।