সাত কলেজের আন্দোলন প্রত্যাহার, উপ-উপাচার্যের পদ নিয়ে প্রশ্ন !

নিজস্ব প্রতিবেদক
তানভীর তালুকদার রাকিব
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৮শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৫:৪৭ অপরাহ্ন
সাত কলেজের আন্দোলন প্রত্যাহার, উপ-উপাচার্যের পদ নিয়ে প্রশ্ন !

সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকের পর এ ঘোষণা দেন তারা। বৈঠকে শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে একটি মেনে নেওয়া হয়েছে এবং বাকিগুলো পর্যালোচনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মঈনুল ইসলাম বৈঠকের পর জানান, উপ-উপাচার্য মামুন আহমেদকে সাত কলেজের কোনো কার্যক্রমে যুক্ত রাখা হবে না এবং তার পদত্যাগের বিষয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।  


ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন জানান, নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন তারা। অন্য দাবিগুলো মেনে নেওয়ার বিষয়েও আশাবাদী। এর আগে রবিবার উপ-উপাচার্যের দুর্ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে শাহবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করতে হয় এবং বিজিবি মোতায়েন করা হয়।  


আন্দোলনকারীদের প্রধান অভিযোগ ছিল ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা এবং উপ-উপাচার্যের অপমানজনক আচরণ। দাবি মেনে না নেওয়ায় তারা উপ-উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করারও চেষ্টা করেন। এতে গভীর রাতে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় কয়েকজন আহত হন।  


রোববার রাত ৩টায় সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা জানায়, দাবি আদায় না হলে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য নিজ নিজ কলেজে অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন। এর পর সোমবার উপাচার্যের সঙ্গে সাত কলেজের অধ্যক্ষদের জরুরি বৈঠক হয়। উপাচার্য জানান, সাত কলেজের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হবে না এবং চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।  


তবে শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে অনড় থাকেন এবং তাকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। তারা অভিযোগ করেন, তার সিদ্ধান্তহীনতা এবং আচরণই তাদের আন্দোলনে নামতে বাধ্য করেছে। মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করলেও আন্দোলনের পুরো বিষয়টির জন্য উপ-উপাচার্যকেই দায়ী করেছেন তারা।  


শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল স্বচ্ছ ও দ্রুত কার্যকর প্রক্রিয়ায় সমস্যার সমাধান। উপ-উপাচার্যকে দায়মুক্ত রাখার প্রক্রিয়াটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে। আন্দোলন প্রত্যাহারের পর তারা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি নেবেন।  


এ ঘটনায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। তাদের মতে, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্রমাগতভাবে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস পাওয়ার পরও তারা পুরোপুরি আশ্বস্ত নন এবং দাবি বাস্তবায়নের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখবেন।