মৌলভীবাজার সার্কিট হাউজে শ্রম সংস্কার কমিশনের আয়োজনে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় সোমবার দুপুরে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। এছাড়া কমিশনের সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, তপন দত্ত, এম কামরান টি রহমান চৌধুরী, আশিকুল আলম, এবং শাকিল আখতার চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। মৌলভীবাজার জেলার জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেনও সভায় অংশ নেন।
সভায় শ্রমিক সংগঠন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি এবং স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স-এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ড. মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান, পারভেজ কৈরী, ফরহাদ আহমেদ, প্রভাষ নায়েক এবং সুবর্ণা গোস্বামী। অক্সফ্যামের পক্ষে ছিলেন তারেক আজিজ ও শহাজাদী বেগম।
শ্রম সংস্কার কমিশন তাদের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মতবিনিময় সভা করছে। এই সভাগুলোতে অংশগ্রহণকারীদের মতামত সংগ্রহ করে কমিশন ৯০ দিনের মধ্যে একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে যা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া হবে।
সভায় দাতা সংস্থা অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ, ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স এবং বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের দাবির উপর একটি সুপারিশপত্র উপস্থাপন করা হয়। এতে শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়।
সুপারিশপত্রে উল্লেখ করা হয়, চা বাগানে মাতৃত্বকালীন ছুটি বৃদ্ধি এবং দস্তুর আইন ও শ্রম আইনের সাংঘর্ষিক ধারাগুলো বাতিল করা অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া ভূমি অধিকার নিশ্চিতকরণ, ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদে শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ এবং ট্রেড ইউনিয়নের কার্যক্রম প্রসারের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হয়।
সুপারিশে আরও বলা হয়, শ্রমিকদের জন্য উন্নত চিকিৎসাসেবা, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ এবং আবাসন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা জরুরি। পাশাপাশি শ্রমিকদের শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি এবং দক্ষতা উন্নয়নের জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন।
নারী নেতৃত্বের বিকাশ এবং সামাজিক সমস্যা নিরসনে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তাবও উঠে আসে। চা শ্রমিকদের মাদক সমস্যার প্রতিরোধ এবং স্থানীয় সরকারের সেবার প্রতি অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করা হয়।
সভায় বক্তারা বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের দ্রুত নির্বাচন এবং শ্রমিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় কমিটিগুলোর কার্যক্রম আরও জোরদার করার আহ্বান জানান। শ্রম সংস্কার কমিশনের এই উদ্যোগ শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষা এবং উন্নত কর্মপরিবেশ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।