কুরআনের আলোকে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানালেন জামায়াত আমির

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি রাজশাহী
প্রকাশিত: শনিবার ১৮ই জানুয়ারী ২০২৫ ০৫:০৪ অপরাহ্ন
কুরআনের আলোকে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানালেন জামায়াত আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশে ন্যায়বিচার ও ইনসাফ-ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে কুরআনের শাসনের বিকল্প নেই। রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে শনিবার জামায়াতের বিশাল কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে আমাদের ন্যায়ের যুদ্ধ চলবে যতক্ষণ না সমাজে ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হয়।  


তিনি বলেন, বাংলাদেশে বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত এবং ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি কল্যাণময় রাষ্ট্র গড়তে হবে। অতীতে অনেক ত্যাগ স্বীকার করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও ত্যাগের প্রয়োজন হতে পারে। তিনি আরও বলেন, শহিদদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। তাদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।  


সমাজ থেকে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব দূর করার জন্য সবাইকে সতর্ক হতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। রাজশাহীর মতো শিক্ষানগরীতে চাঁদাবাজি, ফুটপাত দখল এবং ঘুস বাণিজ্যের মতো অপরাধের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি সংশ্লিষ্টদের এসব বন্ধ করার আহ্বান জানান, কারণ এটি শহিদদের প্রতি অবমাননা।  


তিনি বলেন, আমাদের শহিদরা জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে তারা ইনসাফভিত্তিক সমাজ চেয়েছিলেন। তবে এখনো অনেক মানুষ ঘুস, মামলা বাণিজ্য এবং অন্যায়ের মাধ্যমে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি তিনি অনুরোধ জানান।  


তিনি আরও বলেন, আমরা একটি সাহসী জাতি গড়তে চাই, যে জাতি আল্লাহর আদেশ ছাড়া কারও সামনে মাথানত করবে না। তিনি অভিযোগ করেন, বিগত ১৫ বছর ধরে আলেম-ওলামাদের উপর নানা নিপীড়ন চালানো হয়েছে। অনেক নেতা ও কর্মীকে গুম, হত্যা এবং বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে।  


জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীরা অংশ নেন। এ সময় আমির জানান, শহিদরা জাতীয় সম্পদ এবং তাদের আত্মত্যাগ সবার জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। যারা শহিদ হয়েছেন, তারা শুধু জামায়াতের নয়, পুরো জাতির গর্ব।  


কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির ড. মো. কেরামত আলী। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।  


দীর্ঘ ১৫ বছর পর রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত এই কর্মী সম্মেলন ছিল অত্যন্ত জনবহুল। সকালের পর থেকেই নেতাকর্মীরা সম্মেলনে যোগ দিতে মাঠে জমায়েত হন। বিকালে নারী সদস্যদের সমাবেশ এবং সন্ধ্যায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।