ফরিদপুরে সভামাঠেই বিএনপি নেতাকর্মীদের নাওয়া-খাওয়া-ঘুম

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ১১ই নভেম্বর ২০২২ ০৮:৩৪ অপরাহ্ন
ফরিদপুরে সভামাঠেই বিএনপি নেতাকর্মীদের নাওয়া-খাওয়া-ঘুম

আগামীকাল শনিবার (১২ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ। সমাবেশকে ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। গণসমাবেশের দুই দিন আগেই ফরিদপুরের বাইরের বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা সভাস্থলে যোগ দিতে শুরু করেছিলেন।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সভাস্থলের খোলা মাঠেই বিএনপির কিছু নেতাকর্মীরা স্লোগান দিচ্ছেন। পাশেই কেউবা হুগলার মাদুর অথবা পাটের বিছানা বিছিয়ে বসে কিংবা শুয়ে ঘুমাচ্ছেন। সেখানেই যেন সবার নাওয়া-খাওয়া-ঘুম চলছে।


এ সময় কথা হয় রাজবাড়ী কালুখালী উপজেলা থেকে আসা আবু তালেব খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, গণসমাবেশে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) ৪০০ জন নেতাকর্মী কালুখালী থেকে এখানে এসেছেন। আরও কয়েক হাজার বিএনপির নেতাকর্মী তাদের উপজেলা থেকে আসবেন।


তিনি আরও বলেন, এখানে খোলা মাঠেই নিজেরা রান্না করে আমাদের খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমাতে হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করাসহ এ সরকারের দুঃশাসন থেকে মুক্তি লাভের জন্যই এ সমাবেশে স্বতস্ফূর্তভাবে আমাদের যোগদান।


মাদারীপুর থেকে আসা জেলা বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম ও মাহবুব হোসেন মুন্সী বলেন, অনেক বাধা পেরিয়ে বিএনপির এ বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিতে আমরা কয়েক হাজার নেতাকর্মী এসেছি। আমরা সরকারের দুঃশাসন থেকে মুক্তি চাই।


তারা আরও বলেন, সমাবেশস্থলের খোলা মাঠেই আমরা দিন ও রাত যাপন করছি। খাওয়া-ঘুম সব এই মাঠেই করছি।


এদিকে সমাবেশস্থলের পাশেই করা হয়েছে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প। কেউ অসুস্থ হলেই সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।


কেন্দ্রীয় নেতা সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, গোপালগঞ্জ থেকে দুই হাজার নেতাকর্মী এসেছেন। এরকম সব জেলা থেকেই নেতাকর্মীরা আসছেন।


সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির দায়িত্বে থাকা যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুল হাসান পিঙ্কু ভূঁইয়া বলেন, ফরিদপুর কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। কোনো বাধাই নেতাকর্মীদের আটকাতে পারবে না।


পিঙ্কু আরও জানান, প্রতিদিনই কয়েক হাজার নেতা-কর্মীদের মাঝে খবার বিতরণ করা হচ্ছে। জেলার নেতারা এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এসব ব্যবস্থা করছেন।


বিএনপির এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে জেলার শ্রমিক সংগঠনগুলো শুক্রবার ও শনিবার দুইদিনের ধর্মঘট ডেকেছে। এ ঘোষণা আসার আগেই হাজার হাজার নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হতে শুরু করেন। যেটি শুক্রবার আরও বেশি দেখা গেছে।


অন্যদিকে, গণসমাবেশের প্রস্তুতিও প্রায় শেষের পথে। মঞ্চ প্রস্তুত। সমাবেশকে ঘিরে রাস্তা-ঘাট সর্বত্র সাজসাজ রব। সমাবেশস্থল ও সড়কে শোভা পাচ্ছে পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার। নেতাকর্মীদের মাঝেও উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।


ফরিদপুর জেলা যুবদলের সভাপতি মো. রাজিব হোসেন বলেন, বিএনপির এ গণসমাবেশে যোগ দিতে বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচটি জেলা থেকে নেতাকর্মীরা যোগ দিচ্ছেন। এখানে খাওয়া-দাওয়াসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে । কয়েক লাখ লোক এ গণসমাবেশে যোগ দিবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।


এদিকে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন বলেন, সব বাধা উপেক্ষা করে গত দুই দিন ধরে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসছেন। দলকে ভালোবেসে পায়ে হেঁটে, কেউবা ভ্যান, রিক্সা, অটোরিকশা ও ইজিবাইকে ভেঙে ভেঙে পথ অতিক্রম করে সভায় যোগ দিচ্ছেন। আশা করি এ গণসমাবেশ  জনসমুদ্রে রুপ নিবে।