মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা পরিস্কার করে বলছি, এ দেশে তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তত্বাবধায়ক সরকার না দিলে কোনো নির্বাচন হবে না। সে জন্য এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। অনেক ক্ষতি করেছেন এই ১৫ বছরে। আমাদের যা কিছু অর্জন। সব কেড়ে নিয়েছেন। অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছেন। মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা লুট করেছেন।
বুধবার (২ অক্টোবর) বগুড়ার শহীদ টিটু মিলনায়তনে জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করছে দাবি করে ফখরুল বলেন, আমরা অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ৫ জন নেতা-কর্মীকে হারিয়েছি। তার আগে ৬০০ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে। খুন করা হয়েছে অনেককে। মিথ্যা মামলা দিয়ে খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দী করা হয়েছে। আমরা গণতন্ত্রের আন্দোলন করছি। এই লড়াই শেষ লড়াই। এই লড়াই ব্যক্তির বা দলের জন্য নয়। এই লড়াই জাতিকে রক্ষা করার জন্য।
তিনি আরও বলেন, এই বিনা ভোটের সরকার দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। চুরি, দুর্নীতির কারণে এসব হয়েছে। রিজার্ভ খেয়ে ফেলেছে। টাকা পাচার করেছে। খাদ্যশস্য আমদানি কমে গেছে। আমদানি করার জন্য যে পরিমাণ ডলার দরকার সেই পরিমাণ ডলার নেই। রেমিট্যান্স পাঠানো কমে গেছে। এই সংকটের জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ সরকার।
‘বিএনপির দশা হেফাজতের মতো হবে’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার হেফাজতে ইসলামকে যেভাবে নির্মূল করতে চেয়েছিল, সেভাবে জনগণের দল বিএনপিকে নির্মূল করা যাবে না। হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এই সরকার যেভাবে অসংখ্য আলেম-ওলামা ও মাদ্রাসার কিশোর ছাত্রদের হত্যা করেছে। পরবর্তীতে অসংখ্য হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে অনেককে এখনও কারাগারে আটক রেখেছে, এটা তারই স্বীকারোক্তি।
মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েক দিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন। প্রশ্ন রেখে বিএনপির মহাসচিব বলেন, কেন আপনি তো ঘোষণা দিয়েছেন যে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছে। তারা জাতির সামনে এই মিথ্যা কথাই প্রচার করে। হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। এখন বলছে, দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছে। বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে একবার দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। তখন অমর্ত্য সেন দুর্ভিক্ষের ওপর গবেষণা করতে গিয়ে উনি যখন বই লিখলেন, চুয়াত্তর সালে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার জন্য। তাদের দুঃশাসনের জন্য, লুটপাটের কারণে। আজকে আবার সেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে, আবার সেই আগের মতো সারা বাংলাদেশকে লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলন উদ্বোধক ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ। বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সহ সাংগাঠনিক সম্পাদক এএসএম ওবায়দুর রহমান চন্দন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেজা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাড. একেএম মাহবুবর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।